নাঈম ইসলাম সংগ্রাম,হাবিপ্রবিঃ
বিভিন্ন দাবিতে দুইদিন যাবৎ আন্দোলন করছে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
আজ সোমবার (১৯ মে) সকাল ১১ টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন সম্মুখে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। উক্ত আন্দোলনে দুই বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করেছেন।
তারা বলছেন এ যাবৎ বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে তারা তাদের শিক্ষা-কার্যক্রমের সাথে যুক্ত ছিলেন কিন্তু এখন আর সম্ভব না।কারণ এভাবে শিক্ষা-কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করলে পরিশ্রম ঠিকই হচ্ছে কিন্তু ফলাফল আসছে না।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী জেসমিন আক্তার বলেন, আমাদের এখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্লাসরুম নেই, ল্যাব সুবিধা নেই, শিক্ষক সংকট কমেনি।যার কারণে আমরা আইইবি এক্রিডেশন পাচ্ছি না। দেখা যাচ্ছে আমরা অন্যান্য প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মতই পরিশ্রম করছি কিন্তু আমরা সে অনুযায়ী প্রতিফলন পাচ্ছি না।আমরা স্বাক্ষর করার অধিকার পাচ্ছি না,নামের পূর্বে ইঞ্জিনিয়ার যুক্ত করতে পারছি না।যা নিঃসন্দেহে একটি খারাপ লাগার এবং হতাশার বিষয়।তিনি আরো বলেন,আমরা দুইদিন যাবৎ শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে গেছি কিন্তু প্রশাসন কোনো ইতিবাচক আশ্বাস দেয়নি কিংবা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি।
নেপাল থেকে পড়তে আসা বিভাগটির একই ব্যাচের আরেক শিক্ষার্থী সওগাত বলেন, আমি নেপাল থেকে এখানে পড়তে এসেছি।কিন্তু এসে দেখছি বিভাগটিতে শিক্ষক সংকট, ক্লাসরুম সংকট,ল্যাবের সেরকম সুবিধা নেই।আবার এদেশের আইইবির মতো গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতিও নেই।
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী আতিক শাহরিয়ার তাজ বলেন, প্রায় ৫ বছর যাবৎ পড়াশোনা করছি আমার নিচে আরো চার ব্যাচ শিক্ষার্থী আছে।আমাদের কাউকেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা দিতে পারেনি।এখন আবার নতুন শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে যাচ্ছে। আমাদের বিভাগের প্রায় ১০ বছর হতে যাচ্ছে কিন্তু ভালো কোনো অফিস রুম নাই,স্থায়ী কোনো ফ্লোর নাই যা একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ধিক্কার।আমাদের যেহেতু ল্যাব নাই ল্যাব সুবিধাটাও সুনিশ্চিত করা প্রশাসনের জন্য জরুরি। কারণ মেকানিক্যাল বিভাগের জন্য ১৪ টি করে ল্যাব প্রয়োজন সাথে ল্যাব টেকনিশিয়ান এবং এসিস্ট্যান্ট।
ঐ বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি এখনও পর্যন্ত পূরণ করা হয়নি।আমরা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার পরেও ইঞ্জিনিয়ার না।কারণ আমাদের আইইবি এক্রিডেশন নাই।আমরা শুধুমাত্রই একজন বিএসসি ডিগ্রিধারী। তাই উদাত্ত আহ্বান থাকবে আইইবি এক্রিডেশন বাস্তবায়নের জন্য যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার প্রশাসন সেই বিষয়গুলো নিশ্চিত করে আইইবি এক্রিডেশনটা অল্প সময়ের মাঝেই নিশ্চিত করবেন।
এ বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এস এম কামরুল হাসান বলেন,শিক্ষার্থীদের সমস্যা মানে আমাদেরই সমস্যা। আমরা জরুরি সভায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের ব্যাক্তিদের সাথে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক সমস্যাগুলো তুলে ধরবো।আশা রাখছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যৌক্তিক বিষয়গুলো আমলে নিয়ে প্রয়োজন সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিয়ে সহযোগিতা করবেন। ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের সকল শিক্ষকই আন্তরিক শিক্ষার্থীদের বিষয়ে। তারা আমাকে সহযোগিতা করছেন যাতে আমাদের শিক্ষার্থীরা তাদের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পায়।