আলু আমাদের খাদ্যতালিকার অন্যতম প্রধান উপাদান। এটি গ্লুটেনমুক্ত, কোলেস্টেরল ও সোডিয়ামবিহীন এবং প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ।
তবে অনেক সময় সংরক্ষণের কারণে আলুতে অঙ্কুর গজায়, যা অনেকের মনে প্রশ্ন জাগায়—এটি কি খাওয়া নিরাপদ?
কেন আলুতে অঙ্কুর গজায়?
আলু গরম, আর্দ্র এবং আলোযুক্ত পরিবেশে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই এতে অঙ্কুর গজাতে শুরু করে। এটি একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া, যার ফলে আলুর গঠন এবং পুষ্টিগুণে কিছু পরিবর্তন আসে।
অঙ্কুরিত আলুর পুষ্টিগুণ পরিবর্তন হয় কি?
বিশেষজ্ঞদের মতে, অঙ্কুরিত আলু পুরোপুরি ক্ষতিকর নয়, তবে এতে কিছু পুষ্টিগুণ হ্রাস পায়। অঙ্কুর গজানোর সময় আলুর সংরক্ষিত শক্তি (কার্বোহাইড্রেট ও ভিটামিন সি) ব্যবহৃত হয়, ফলে এর পরিমাণ কিছুটা কমে যায়। তবে এতে থাকা ভিটামিন বি৬ ও ফাইবার একই থেকে যায়।
কোন ক্ষেত্রে এটি ক্ষতিকর হতে পারে?
অঙ্কুরিত আলুতে সোলানিন এবং গ্লাইকো-অ্যালকালয়েডের পরিমাণ বাড়তে পারে। এই প্রাকৃতিক রাসায়নিকগুলি অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণ করলে বমি, ডায়রিয়া, মাথাব্যথা এবং স্নায়ুর সমস্যার কারণ হতে পারে। বিশেষ করে, যদি আলু নরম হয়ে যায় বা সবুজাভ বর্ণ ধারণ করে, তবে তা না খাওয়াই উত্তম।
অঙ্কুরিত আলু খাওয়া যাবে কিনা?
যদি আলু শক্ত থাকে এবং অঙ্কুর ছোট হয়, তবে অঙ্কুর ও সবুজ অংশ কেটে ফেলে রান্না করা যেতে পারে। সবুজাভ বা নরম আলু খাওয়া উচিত নয়, কারণ এতে বিষাক্ত উপাদান বেশি থাকে।
আলু সংরক্ষণের সঠিক উপায়
ঠান্ডা, শুকনো এবং অন্ধকার স্থানে সংরক্ষণ করুন (৭-১০°C)। পেঁয়াজের সঙ্গে আলু একসঙ্গে রাখবেন না, কারণ পেঁয়াজ থেকে নির্গত গ্যাস আলুর অঙ্কুর গজানোর হার বাড়ায়।
সাধারণত, অল্প অঙ্কুরিত আলু খাওয়া যেতে পারে, তবে অতিরিক্ত অঙ্কুরিত বা সবুজাভ আলু না খাওয়াই ভালো। সঠিকভাবে সংরক্ষণ করলে আলুর অঙ্কুর গজানোর হার কমানো সম্ভব এবং এটি দীর্ঘদিন ভালো রাখা যায়।