অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনেও নেই, দেশ পরিচালনায়ও ব্যর্থ: গয়েশ্বর চন্দ্র
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন পরিচালনায় ব্যর্থ এবং দেশের ব্যবস্থাপনায় কোনো বাস্তব পরিবর্তন আসেনি। তিনি অভিযোগ করেন, সরকার কেবল সংস্কারের প্রচারণায় ব্যস্ত, কিন্তু প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে দেরি করছে।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে লালমনিরহাট রেলওয়ে মুক্ত মঞ্চে অনুষ্ঠিত এক জনসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখার সময় তিনি বলেন, “এই সরকারের মূল দায়িত্ব হলো একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রদান করা, কিন্তু তারা তা করতে ব্যর্থ। বরং সকাল-বিকাল শুধু সংস্কারের প্রচারণা চালাচ্ছে।”
গণমাধ্যমে তাঁর বক্তব্যে আরো বলা হয়, “দেশে কোনো সত্যিকারের পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না; সবকিছু আগের মতোই চলছে। বাজারে সিন্ডিকেটের প্রভাব এখনও বিরাজ করছে, এবং সরকার এ ব্যাপারে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি।”
তিনি আরও প্রশ্ন তুলেন, “আমরা একবার আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল ফ্যাসিবাদকে নির্মূল করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা। কিন্তু এই ১৬ বছরে আমরা কী অর্জন করেছি? কেন এত শহীদ ও নির্যাতিত হয়েছে? বিএনপিকে নির্মূল করার ষড়যন্ত্র হয়েছিল, কিন্তু বাস্তবে বিএনপি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।”
বর্তমান দ্রব্যমূল্যের দ্রুত ঊর্ধ্বগতি ও কৃষকদের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায়ও তিনি অভিযোগ করেন, “বাজারে সিন্ডিকেটের প্রভাব বিরাজ করছে এবং এর বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।”
তার মতে, “গণতন্ত্র ও দেশের স্বার্থের জন্য আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া কখনো আপস করেননি। তিনি নানা নির্যাতনের শিকার হলেও গণতন্ত্রের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু বর্তমান সরকার জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে চায় না, কারণ তারা জানে, নির্বাচন হলে বিএনপিই ক্ষমতায় আসবে।”
লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে সমাবেশে রংপুর বিভাগীয় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম ও আব্দুল খালেকও বক্তব্য রাখেন।
সভাপতির বক্তব্যে আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, “আমরা ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে ১৬ বছর রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস ও হামলা-মামলার সম্মুখীন হয়েছিলাম। যদি বর্তমান সরকারের সময় কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়, তবে এ সরকারের কিছুই থাকবেনা। আমরা চাই, এই সরকার অল্প সময়ের মধ্যে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুক।”
সমাবেশে আরও কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ব্যারিস্টার রাজিব হাসান, লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সহসভাপতি রোকন উদ্দিন বাবুল, অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম রফিক ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক একেএম মমিলুল হক তাঁদের বক্তব্য রাখেন।