অপকর্মে বহিষ্কৃতদের আর সুযোগ দেবে না বিএনপি
ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর দখল, চাঁদাবাজি ও অনিয়মে জড়িত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যারা এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকবে, তাদের জন্য বিএনপিতে আর কোনো সুযোগ থাকবে না। দলের বার্তা স্পষ্ট— ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদের এলডি হলে অনুষ্ঠিত বর্ধিত সভায় দলের এই কড়া অবস্থান তুলে ধরা হয়। সভায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্য দেন এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সভার সভাপতিত্ব করেন।
বিএনপির হাইকমান্ড স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, দলে কোনো সন্ত্রাসী, অনুপ্রবেশকারী বা সুবিধাবাদীদের জায়গা হবে না। অতীতে যারা দখল ও চাঁদাবাজিতে জড়িত ছিল, তারা ভবিষ্যতে এসব কাজে লিপ্ত হলে সরাসরি বহিষ্কারের শিকার হবে। ইতোমধ্যে ৫ আগস্টের পর বহিষ্কৃত নেতাকর্মীদের আর দলে ফেরানো হবে না বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সভায় দিনাজপুরের আব্দুস সালাম মিলন অভিযোগ করেন, ৫ আগস্টের পর বিএনপির ভেতরে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে, যা দলে বিভেদ সৃষ্টি করছে। তিনি ত্যাগী নেতাদের পুনর্বহালের দাবি জানান এবং হাইব্রিডদের ঠেকানোর আহ্বান জানান। নেতারা আশঙ্কা করছেন, সামনে অপকর্মে জড়িত নেতাকর্মীদের সংখ্যা বাড়তে পারে, তাই এখন থেকেই কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু সভায় বলেন, দলের ভেতরে যে কোনো মতভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে, কারণ ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুও জানান, দলে সন্ত্রাসীদের ঠেকানো এবং নেতাকর্মীদের জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সভায় সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করা, নেতাকর্মীদের জনগণের কাছে পৌঁছানোর তাগিদ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানানো হয়।
বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম বলেন, নেতাকর্মীদের নেতিবাচক কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি তোলা হয়েছে।
দলে চাঁদাবাজ, দখলদার ও সন্ত্রাসীদের ঠাঁই নেই, ত্যাগী ও সৎ নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করা হবে। দলের অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে ঐক্য ধরে রাখতে হবে। বিএনপির সকল নেতাকর্মীদের জনগণের পাশে থেকে কাজ করতে হবে। নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
এই কঠোর অবস্থানের মাধ্যমে বিএনপি দলীয় শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠার পাশাপাশি জনগণের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করছে।