ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবনের তৃতীয় তলায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার রাত প্রায় ৮:৪৫ মিনিটে এ আগুন দেওয়া হয়, যার মধ্যে তখনও চলছিল ভাঙচুর। রাত ১১টার দিকেও ভবনটিতে আগুন জ্বলতে দেখা যায়।
ভবনটি ভেঙে ফেলার উদ্দেশ্যে রাত ১০:৪৫ মিনিটের দিকে একটি বড় ক্রেন আনা হয়, পরে সেখানে আরও একটি এক্সকাভেটর নিয়ে আসা হয়। ৩২ নম্বর বাড়ির পাশের আরেকটি ভবনের এক পাশেও আগুন দেখা গেছে।
ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় অনেক মানুষ অবস্থান করছিলেন, এবং কেউ কেউ দেয়াল ভাঙছিলেন। কিছু ব্যক্তি হাতুড়ি ও লাঠি ব্যবহার করে সীমানাদেয়াল ভাঙছিলেন। কিছু মানুষকে জানালার গ্রিল ও কাঠ খুলে নিয়ে যেতে দেখা যায়। অনেকে ঘটনাস্থলে এসে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে চলে যাচ্ছিলেন।
রাত ১১টার সময়ও কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী বাড়িটির সামনে অবস্থান করছিলেন এবং বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিলেন। সবচেয়ে বেশি শোনা যাচ্ছিল ‘স্বৈরাচারের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ স্লোগানটি।
এদিকে, ৩২ নম্বর ভবনের উল্টো পাশে লেকের সেতুর পাশে একটি খোলা জায়গায় আন্দোলন সংশ্লিষ্ট একটি দল জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করছিল। আয়োজকদের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হচ্ছিল, ‘যারা ভাঙচুর করতে চান, তারা সামনে যান, আর যারা প্রামাণ্যচিত্র দেখতে চান, তাদের সুযোগ দিন।’
বিকেলে শতাধিক বিক্ষোভকারী ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জড়ো হন এবং রাত ৮টার দিকে বিক্ষোভ তীব্রতর হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে তারা মূল ফটক ভেঙে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করেন এবং ভাঙচুর চালান।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এই বাড়িটিতেই শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা করা হয়েছিল, যা পরবর্তীতে একটি স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে সংরক্ষিত হয়।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৫ আগস্ট বিক্ষুব্ধ জনতা ৩২ নম্বর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এরপর থেকেই বাড়িটি অনেকটা পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল।