কমলগঞ্জ উপজেলায় তিনটি বনবিটসহ রাজকান্দি বনরেঞ্জের বিস্তীর্ণ রিজার্ভ ফরেস্ট হুমকিতে পড়েছে। গাছ ও বাঁশ মহাল সমৃদ্ধ উপজেলায় অসাধু চক্রের দৃষ্টি পড়েছে বন ও চা-বাগানের গাছগাছালির ওপর।
সম্প্রতি বনবিভাগ অভিযান চালিয়ে সতিঝির গ্রামে করাতকল থেকে ৪২ টুকরো আকাশি গাছের খণ্ডাংশ জব্দ করেছে। উপজেলায় বৈধ, অবৈধ ৩২টি করাতকল রয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, কেটে রাখা গাছের সারি সারি স্তূপ। প্রতিনিয়ত চিরানো হচ্ছে অবৈধ গাছের খণ্ডাংশ। ফলে চায়ের টিলা ও বনভূমি গাছশূন্য হচ্ছে।
জানা গেছে, রাজকান্দি বনরেঞ্জ, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান আর চা-বাগান খ্যাত উপজেলায় ২২টি চা-বাগান, কামারছড়া, আদমপুর ও কুরমা বনবিট রয়েছে। রাজকান্দি রেঞ্জের তিনটি বিট থেকে প্রতি রাতেই কোনো না কোনোভাবে গাছ ও বাঁশ পাচারের অভিযোগ উঠছে। এর পাশাপাশি চা-বাগানের টিলাভূমি থেকেও গাছ কেটে পাচার হচ্ছে। এসব গাছের বড় অংশই করাতকলগুলোতে নিয়ে স্তূপ করে রাখা হয়। সেখানে কেনাবেচা ও চিরানো হয়। ৩২টি করাতকলের অর্ধেক করাতকলই অবৈধ বলে জানা গেছে।
(২৪ জানুয়ারি ) সরেজমিনে দেখা গেছে, ট্রলি, পিকআপ, ট্রাক ও ট্রাক্টরযোগে করাতকলগুলোতে নিয়ে আসা হচ্ছে গাছের খণ্ডাংশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় দুই গাছ ব্যবসায়ী বলেন, ‘স’ মিল মালিকরা বনবিভাগের সঙ্গে লিয়াজোঁ করেই মিলগুলো পরিচালনা করছেন। ফলে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। পরিবেশ কর্মী আহাদ মিয়া ও শিক্ষক জমসেদ আলী বলেন, করাতকলগুলোতে যে হারে বন ও চা-বাগানের গাছ চিরানো হচ্ছে তাতে প্রাকৃতিক বন এবং চায়ের টিলা বৃক্ষশূন্য হয়ে পড়ছে। এতে একদিকে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল বিলুপ্ত হচ্ছে অন্যদিকে চা-বাগানে ছায়াবৃক্ষের অভাবে চায়ের উৎপাদনও কমছে।
রাজকান্দি বনরেঞ্জ অফিসের দায়িত্বে নিয়োজিত সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) প্রীতম বড়ুয়া বলেন, করাতকলগুলোতে আমাদের নজরদারি আছে। সম্প্রতি সতিঝির গ্রামে ‘স’ মিলে অভিযান পরিচালনা করে কয়েক টুকরো কাঠ মার্কিং করা হয়েছে। মালিক কাগজ দেখাতে পারেননি। তবে কাঠগুলোর সিজার লিস্ট হয়নি। বনের কিংবা চা-বাগানের গাছের খবর পেলেই অভিযান পরিচালনা করি।