আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে নতুন করে ১২টি রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করেছে। পরিবর্তনের প্রত্যাশায় রাজনীতির মাঠে নামলেও এসব দলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এখনো স্পষ্ট নয়। মাঠপর্যায়ে তাদের উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমও চোখে পড়ছে না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই দলগুলো ভবিষ্যতে কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।
গণ-অভ্যুত্থানের পর গঠিত এসব দল দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারবে না বলে মত দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দীন আহমেদ। তিনি মনে করেন, একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠার জন্য সংগঠনিক ভিত্তি গড়ে তোলা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তবে যারা গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদের যদি দল গঠনের উদ্যোগ থাকে, তাহলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে। তরুণ প্রজন্মের ব্যাপক অংশগ্রহণে ঘটে যাওয়া ৫ আগস্টের বিপ্লবের ধারাবাহিকতায় রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে।
অন্যদিকে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না মনে করেন, রাজনৈতিক আদর্শ বা দৃষ্টিভঙ্গি ছাড়া কোনো দল টিকে থাকতে পারে না। তিনি বলেন, নতুন দলগুলো শুধু ভারত ও আওয়ামী লীগবিরোধিতার ওপর জোর দিচ্ছে, কিন্তু তারা দেশের অর্থনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতি নিয়ে কী করতে চায়, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো বক্তব্য দেয়নি।
নবগঠিত দলগুলোর মধ্যে ‘আমজনতার দল’, ‘দেশ জনতা পার্টি’, ‘জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ’, ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি)’, ‘বাংলাদেশ জাগ্রত পার্টি’, ‘বাংলাদেশ মুক্তির ডাক ৭১’, ‘বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি)’, ‘সার্বভৌমত্ব আন্দোলন’, ‘বাংলাদেশ জনপ্রিয় পার্টি (বিপিপি)’, ‘সমতা পার্টি’, ‘ওয়ার্ল্ড মুসলিম কমিউনিটি’ এবং ‘জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পার্টি’ অন্যতম।
এছাড়া, ‘জাতীয় জনতার জোট’ ও ‘বিপ্লবী গণজোট’ নামে দুটি নতুন রাজনৈতিক জোটও আত্মপ্রকাশ করেছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সংগঠন শক্তিশালী না হলে এবং জনসমর্থন অর্জন করতে না পারলে এসব নতুন দল টিকে থাকা কঠিন হবে।