বাংলাদেশের জাতীয় শোক দিবস ১৫ই আগস্ট। তবে এবছর ২০২৪ সালে এসে জুলাই মাস থেকে শুরু হওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলন আগস্টে এসে এক দফা অর্থাৎ সরকার পতনের দাবি তে রূপ নেয়। জনতার দাবির মুখে ৫ই আগস্ট পদত্যাগ করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটিকে ছাত্র সমাজসহ অনেকেই বিজয় হিসেবে গণ্য করছে।
এদিকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর ডক্টর মুহম্মদ ইউনুস কে প্রধান উপদেষ্টা নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল সোমবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করেছেন। বৈঠকে ১৫ আগস্ট ‘জাতীয় শোক দিবস’ বাতিলের বিষয়ে দলগুলোর মতামত নেওয়া হয়েছে। দলগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শোক দিবস বাতিলের পক্ষে তারা মত দিয়েছে।
গতকাল বিকেল ৪টা থেকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ও বাসভবন যমুনায় দলগুলোর সঙ্গে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
তবে শোক দিবস বাতিলের বিষয়ে সরকারের দায়িত্বশীল কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না জানালেও শোক দিবসের মাত্র তিন দিন আগে এ বিষয়ে আলোচনার বিষয়টিকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। দিনটিকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করে আসছে আওয়ামী লীগ। ২০০১ সালে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার ওই দিনের ছুটি বাতিল করে।
তবে পরবর্তী সময়ে ১৫ আগস্টে জাতীয় শোক দিবসের সরকারি ছুটি বাতিলকে অবৈধ বলে রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
বৈঠক সূত্রগুলো জানায়, গতকালের বৈঠকে মূল আলোচ্যসূচিতে ছিল ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ও এ দিন ছুটি বাতিলের বিষয়টি। তবে বৈঠকে প্রসঙ্গক্রমে বিএনপি তাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানায়।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি, জামায়াতসহ অন্য দলগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে তাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার কোনো আলোচনা হয়নি।
বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা জানান, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে চিঠি দিয়েছে দলটি।
বিএনপির সঙ্গে বৈঠকের পর জামায়াত, এবি পার্টি, ইসলামী আন্দোলন, গণতন্ত্র মঞ্চ, গণ অধিকার পরিষদের দুই অংশ ও এনডিএমসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। সব দলের কাছ থেকে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস বাতিলের বিষয়ে মতামত নেওয়া হয়। বৈঠকে জাতীয় পার্টিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।