মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও মিথ্যা তথ্য দিয়ে সরকারের কাছ থেকে সনদ নেওয়া এমন অন্তত ১২ ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে সনদ ফেরত দেওয়ার আবেদন করেছেন।
তাঁদের মধ্যে এক ব্যক্তি সনদ নেওয়া ভুল হয়েছে উল্লেখ করে ক্ষমা চেয়েছেন, আবার কেউ লিখেছেন, “আমি লজ্জিত”।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এই ব্যক্তিরা নিজেদের অনৈতিক কাজের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং নিজেদের সনদ ফেরত দিতে চাচ্ছেন। তবে, মন্ত্রণালয় থেকে এই ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করা হয়নি, কারণ তাঁদের সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ফারুক-ই-আজম, যিনি অন্তর্বর্তী সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা, ১১ ডিসেম্বর এক অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও সনদ নেওয়া ব্যক্তিদের সনদ ফেরত দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এটি জাতির সঙ্গে প্রতারণা এবং এটা বড় অপরাধ। তিনি বলেন, যাঁরা সনদ ফেরত দিতে চান, তাঁদের জন্য একটি ইনডেমনিটি (দায়মুক্তি) প্রস্তাব করা হবে এবং পরে যদি ফেরত না দেওয়া হয়, তবে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ফারুক-ই-আজম আরও জানান, যেহেতু সনদ ফেরত দেওয়ার জন্য একটি সময়সীমা নির্ধারণ করা হবে, সেক্ষেত্রে এই সময়ের মধ্যে যদি কেউ সনদ ফেরত দেয়, তবে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।
মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এক ব্যক্তি তাঁর আবেদনপত্রে লিখেছেন, “আমি মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও প্রলোভনে পড়ে মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়েছি। আমি স্বেচ্ছায় এটি ফেরত দেওয়ার আবেদন করেছি।”
এছাড়া, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে, মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়ে সুবিধা নেওয়ার অভিযোগে পাঁচ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সনদ বাতিল করা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে ছিলেন সাবেক সচিব কে এইচ মাসুদ সিদ্দিকী, মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামান, নিয়াজ উদ্দিন মিয়া, এ কে এম আমির হোসেন ও যুগ্ম সচিব আবুল কাসেম তালুকদার।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর, ফারুক-ই-আজম মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পাওয়া ব্যক্তিদের তথ্য যাচাই–বাছাই করার ঘোষণা দেন। এর ফলস্বরূপ, ৮৯ হাজার ২৩৫ কর্মকর্তা-কর্মচারীর তথ্য মন্ত্রণালয়ে জমা পড়েছে এবং ইতিমধ্যে ৪০ হাজারের যাচাই–বাছাই সম্পন্ন হয়েছে।