ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লালন শাহ হলের গণরুমে বিবস্ত্র করে র্যাগিংয়ের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হল প্রশাসন। কমিটিকে আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারী) দুপুর ১ টায় হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানা যায়।
কমিটিতে হল প্রভোষ্ট ও হলটির আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক ড. আলতাফ হোসেনকে আহ্বায়ক ও হলের সহকারী রেজিস্ট্রার জিল্লুর রহমানকে সদস্য সচিব করে চার সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, আবাসিক শিক্ষক আব্দুল হালিম ও ড. হেলাল উদ্দিন।
আফিস আদেশে বলা হয়, গত ৭ ফেব্রুয়ারি লালন শাহ হলের ১৩৬ নং কক্ষে সংগঠিত র্যাগিংয়ের পরিপ্রেক্ষিতে রুমে অবস্থানরত ভুক্তভোগি আল-ফিকহ বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং মুদ্দাসির হোসেন কাফি, শারিরীক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগ ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ মধ্যে ঘটে যাওয়া র্যাগিং এর প্রেক্ষিতে হল অফিসে মৌখিক বা লিখিত কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি গত ১০ ফেব্রুয়ারি সহকারী প্রক্টরের মাধ্যমে অবহিত হওয়ার পর তাৎক্ষনিক অভিযুক্ত রুমে তদন্ত করা হয়। সে সময় রুমে কাউকে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি যথযথ তথ্য উদ্ঘাটন ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য নিম্নলিখিত সদস্যদের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।
প্রসঙ্গত, গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টার দিকে অভিযুক্তরা পরিচয়পর্বের নামে ভুক্তভোগীকে হলের ১৩৬ নং কক্ষে ডেকে নেয়। এ সময় বাবা-মা তুলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তারা। ভুক্তভোগীকে অশালীন অঙ্গভঙ্গি করতে বাধ্য করে তারা। এসব করতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে রড দিয়ে মারধর করেন। একপর্যায়ে অভিযুক্তরা ভুক্তভোগীকে জোরপূর্বক উলঙ্গ করে টেবিলের উপর দাঁড় করিয়ে রাখে। উলঙ্গ অবস্থায় তাকে পর্নোগ্রাফি দেখতে বাধ্য করেন তারা।
এছাড়াও এ সময় তাকে নাকে খত দেওয়াসহ বিভিন্নভাবে শারীরিক নির্যাতন করে অভিযুক্তরা। রাত ১২টা থেকে প্রায় ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত দফায় দফায় চলে এ নির্যাতন। এ সময় তাকে ভয় দেখিয়ে তার বিছানাপত্র বাইরে ফেলে দেওয়া হয়। অভিযুক্তরা নির্যাতিতকে এ বিষয়ে কাউকে জানালে আরও কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে বলে হুমকি দেয়।
তামিম আশরাফ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া