ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি ড. বখতিয়ার হাসানের পদ অবনমনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন শাপলা ফোরাম। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারী) অনুষদ ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে এ সম্মেলন করে সংগঠনটি।
এসময় সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন, সধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রবিউল হোসেন সহ উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির অন্য নেতাকর্মীরা।
এসময় সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ বলেন, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের নিয়োগ প্রক্রিয়ার অস্বচ্ছতার বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ায় উক্ত বোর্ডের একজন নিয়োগ প্রার্থী সংক্ষুব্ধ হয়ে দূর্ণীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেন। দুর্নীতি দমন কমিশন অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্ত শুরুর নির্দেশ দেন যা এখনও চলমান আছে। দুর্নীতি দমন কমিশন ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির তদন্তের নির্দেশ প্রদানের পরপরই উপাচার্য ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের তৎকালীন সভাপতির বিরুদ্ধে নিয়োগ বোর্ডে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ এনে এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন। ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের তৎকালীন সভাপতি ড. বখতিয়ার হাসান তাঁর বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা অভিযোগের প্রতিকার চেয়ে শাপলা ফোরাম বরাবর আবেদন করেন। বখতিয়ার হাসানের আবেদনের প্রেক্ষিতে শাপলা ফোরামের কার্যনির্বাহী কমিটি একাধিকবার উপাচার্যসহ প্রশাসনের সাথে মতবিনিময় করেন এবং সম্মানজনক সমাধানের আহ্বান জানান। শাপলা ফোরামের সকল আহ্বান উপেক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ড. বখতিয়ার হাসানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শাপলা ফোরামের আহ্বান উপেক্ষা করায় ড. বখতিয়ার হাসান সর্বশেষ উচ্চ আদালতের আশ্রয় নেন এবং আদালত এটিকে স্থগিত করে।
ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়টি যখন উচ্চ আদালতে বিচারাধীন, এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত কার্যক্রম চলমান ঠিক তখনই উপাচার্য তাঁর আস্থাভাজন একটি তদন্ত কমিটির রিপোর্টের মাধ্যমে গত ১২-০২-২০২৪ তারিখ অনুষ্ঠিত ২৬২ তম সিন্ডিকেট সভায় কোন আত্মপক্ষ সমর্থন ছাড়াই ড. বখতিয়ার হাসানকে পদ অবনমন করেন।
প্রসঙ্গত, গতো ২০২২ সালের ২৫ ডিসেম্বর ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রভাষক নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হয়। সেসময় বিভাগটির তৎকালীন সভাপতি অধ্যাপক ড. বখতিয়ার হাসান এর সাথে প্রার্থী চূড়ান্ত মতানৈক্য দেখা যায়। একপর্যায়ে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় চূড়ান্ত তালিকায় স্বাক্ষর না করে বেরিয়ে যান তিনি। এ ঘটনায় ড. বখতিয়ারের বিরুদ্ধে বোর্ডের অন্যান্য সদস্যের সাথে অশোভন আচরণের লিখিত অভিযোগ করেন বোর্ডের এক সদস্য। পরে এ বিষয়ে তদন্তের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেখানে অভিযোগ সত্যতা পায় তদন্ত কমিটি। পরে ২৬২তম সিন্ডিকেট সভায় এ পদক্ষেপ নেয় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।
তামিম আশরাফ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া