ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর কাছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি সরবরাহে সহায়তা করার বিরোধিতা করায় মাইক্রোসফট কর্তৃপক্ষ তাদের দুই কর্মীকে বরখাস্ত করেছে।
গত সোমবার (৭ এপ্রিল) প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে পাঠানো চিঠিতে বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়, যা টাইমস অব ইসরাইল -এর প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে।
মাইক্রোসফট জানিয়েছে, বরখাস্ত হওয়া কর্মীদের মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ আনা হয়েছে, এবং অপর কর্মী নিজের পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। তবে এই ঘটনাপ্রবাহ শুরু হয়েছিল এর কয়েকদিন আগেই, যখন গত শুক্রবার একটি প্রোগ্রাম চলাকালীন মাইক্রোসফটের সফটওয়্যার প্রকৌশলী ইবতিহাল আবুসাদ মঞ্চের দিকে ছুটে যান।
ওই সময় মাইক্রোসফটের এক নির্বাহী কর্মকর্তা নতুন পণ্যের বৈশিষ্ট্য ও কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদী এআই পরিকল্পনা তুলে ধরছিলেন।
আবুসাদ সরাসরি মাইক্রোসফটের এআই বিভাগের প্রধান নির্বাহী মুস্তাফা সুলেমানের উদ্দেশ্যে উচ্চস্বরে প্রতিবাদ জানিয়ে অভিযোগ করেন:
❝মাইক্রোসফট ‘ভালোর জন্য এআই ব্যবহারের’ কথা বললেও বাস্তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীতে এআই অস্ত্র সরবরাহ করছে। এই প্রযুক্তি সরবরাহের ফলেই হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটেছে এবং ফিলিস্তিনের মানুষের ওপর গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। এই গণহত্যার জন্য মাইক্রোসফটকেই দায়ী করা উচিত।❞❞
আবুসাদের এই প্রতিবাদের দৃশ্য দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
প্রতিষ্ঠানের এমন অবস্থানের বিরুদ্ধে তাদের আরও কিছু সহকর্মীও সমর্থন প্রকাশ করেছেন, যদিও সরাসরি এ ঘটনার জেরে শুধুমাত্র দুই কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
মাইক্রোসফটের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, কোম্পানি কর্মক্ষেত্রে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং যেকোনো ধরনের অসদাচরণ বরদাস্ত করা হবে না।
এ দিকে, মানবাধিকার সংগঠন এবং প্রযুক্তি খাতের বিশ্লেষকরা এই বরখাস্তের ঘটনাকে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মত প্রকাশের স্বাধীনতার সংকোচন হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, কর্মীদের উদ্বেগ প্রকাশের অধিকার থাকা উচিত, বিশেষ করে যদি তা মানবিক বিষয়ে হয়। এই ঘটনা আরও একবার বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর নীতিগত অবস্থান এবং কর্মীদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।