বাংলাদেশ তার নিজস্ব গৌরব আর সমহীমায় দাঁড়িয়ে আছে সুদীর্ঘ বছর। এই দেশের রয়েছে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের এক উজ্জ্বল ইতহাস। গৌরবগাঁথা ইতিহাসের সুমধুর ফল ভোগ করে আসছে দেশের আপামর জনগণ। যার ধারবাহিকতায় বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল এবং স্মার্ট।
অথচ স্মার্ট এই দেশের প্রতিটি উন্নয়ন এবং রাষ্ট্রীয় নানামুখী উদ্যোগে পিছিয়ে রাখা হয়েছে বেদে সম্প্রদায়কে। রাজধানীর রামপুরা কাঁচাবাজারের বেদে পল্লীতে গেলে বোঝার উপায় নেই বাংলাদেশ কতোটা এগিয়েছে। কর্দমাক্ত বদ্ধ জলাশয়ের উপর টিনের খুপরি টানিয়ে দীর্ঘ চার যুগ কাটিয়ে দিচ্ছেন বেদে সম্প্রদায়ের প্রায় ৪০ টি পরিবার। যেনো দেখার কেউই নেই।
বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্যের অংশ হয়ে টিকে থাকা বেদেরা মূলত নদীতে ‘জল যাযাবর’ বা ‘নদী যাযাবর’ হিসেবেই বসবাস করে আসছে। আদিকাল কাল থেকে বেদে সম্প্রদায়ের নারীরা জীবিকার তাগিদে শহর কিংবা গ্রাম-গঞ্জে শিঙ্গা টেনে ও জাদুটোনা করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন।
নারীদের পাশাপাশি মাঝে মধ্যে পুরুষরা সাপের বিভিন্ন খেলা দেখান গ্রামের হাট-বাজারে। পুরুষদের নিয়ে নানারকম মিথ থাকলেও বর্তমান পরিস্থিতির কারণে বেদে নারীদের পাশাপাশি পুরোদমে কাজ করতে হয় পুরুষদেরও। এরপরেও সংসার নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যে দিন কাটাতে হয় তাদের।
বেদে সম্প্রদায়ের বয়বৃদ্ধ থেকে শুরু করে ছয় বছরের বাচ্চাদের নেই কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা। রাষ্ট্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বেদে শিশুরা। যার ফলে রাষ্ট্রীয় চাকরি করারও সুযোগ তৈরি হয়না এই সম্প্রদায়ের। স্বভাবতই আর্থিক দিক থেকে অনুন্নত থেকে যেতে হচ্ছে দেশের প্রায় ৮ লক্ষ নদী যাযাবরদের। তাই সমাজের অংশ হিসেবেই এদের পরিপূর্ণ সুযোগ-সুবিধা দিয়েই গড়তে হবে নতুন বাংলাদেশ।