নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫ জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে জারি করা এ অধ্যাদেশে ধর্ষণের সংজ্ঞা পরিবর্তন করে নতুন সংযোজন করা হয়েছে। এখন থেকে নারী ও শিশুর পাশাপাশি কোনো ছেলে শিশুর মুখ বা পায়ুপথে সংঘটিত বলাৎকার-কেও ধর্ষণের অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে।
নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, বলাৎকারের ঘটনাও ধর্ষণের আওতায় আসবে এবং একই ধরনের শাস্তির বিধান থাকবে। পাশাপাশি, আইনের ৪(১) ধারায় পরিবর্তন এনে অর্থদণ্ডের পরিমাণ এক লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ লাখ টাকা করা হয়েছে।
ধর্ষণের তদন্তের সময়সীমা কমিয়ে ৬০ কার্যদিবস থেকে ৩০ কার্যদিবস করা হয়েছে। যদি কোনো অভিযুক্ত ব্যক্তি হাতেনাতে ধরা পড়ে, তবে তদন্ত ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে শেষ করতে হবে। আর হাতেনাতে ধরা না পড়লে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে। অতিরিক্ত সময়ের প্রয়োজন হলে, যথাযথ কারণ দেখিয়ে আদালতের অনুমোদন নিয়ে আরও ১৫ কার্যদিবস সময় বৃদ্ধি করা যাবে।
অধ্যাদেশে ২৬(ক) নামে নতুন ধারা সংযোজন করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে প্রত্যেক জেলা ও মহানগরে শিশু ধর্ষণ সংক্রান্ত অপরাধ বিচারের জন্য পৃথক ট্রাইব্যুনাল গঠন করা যাবে।
এই ট্রাইব্যুনাল “শিশু ধর্ষণ অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল” নামে পরিচিত হবে এবং এটি একজন জেলা ও দায়রা জজের নেতৃত্বে পরিচালিত হবে।
আইনে ৩৫ নম্বর নতুন ধারা যুক্ত করা হয়েছে, যার মাধ্যমে যৌতুক সংক্রান্ত মামলাগুলো নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পরিবর্তে সাধারণ ফৌজদারি আদালতে বিচার হবে।
৩৫(২) ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, যৌতুক সংক্রান্ত মামলাগুলো অপরাধ হিসেবে গণ্যযোগ্য (Cognizable), আপসযোগ্য নয় এবং জামিন-অযোগ্য হবে। এই ধরনের মামলার অভিযোগ দায়ের, তদন্ত, বিচার ও আপিল ফৌজদারি কার্যবিধি ও ১৮৭২ সালের সাক্ষ্য আইনের (Evidence Act, 1872) বিধান অনুযায়ী পরিচালিত হবে।
এই সংশোধনীগুলো যৌন সহিংসতা প্রতিরোধ ও বিচার ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করার লক্ষ্যে আনা হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।