মোঃ মাহিন খান, ঝালকাঠি প্রতিনিধি: ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার গালুয়া ইউনিয়নের কাটাখালি ব্রিজের পশ্চিম পাশ থেকে শুরু হয়ে প্রায় ১ হাজার ৯২০ মিটার দীর্ঘ একটি সড়ক সংস্কারে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)-এর আওতায় ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন এই প্রকল্পে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার ও বিটুমিন কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
‘সিয়াম ট্রেডার্স’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। সরেজমিন পর্যবেক্ষণ ও স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, সড়কটির বিভিন্ন অংশে মানহীন ইটের খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে এবং বিটুমিন প্রয়োজনের তুলনায় কম দেওয়া হয়েছে। যদিও প্রকল্পের তদারকির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা সাইটে উপস্থিত থাকেন, তবে তারা কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে ক্ষোভে ফুঁসছে এলাকাবাসী।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কাজের শুরু থেকেই তারা নির্মাণের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন তুললেও বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। বরং প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও কাজ চালিয়ে যাওয়া এবং নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণে আশঙ্কা করা হচ্ছে, কিছুদিনের মধ্যেই সড়কটি আবার চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়বে।
ঠিকাদারের দাবি, কাজ নিয়ম অনুযায়ীই হচ্ছে। এ বিষয়ে ঠিকাদার মাহমুদুর রহমান বলেন, “এই প্রকল্পটি এলজিইডির জিওবি মেইনটেনেন্স স্কিমের আওতায়। রাস্তার দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৯২০ ফুট এবং বরাদ্দ ৩৫ লাখ টাকা। স্টিমেটে ২৫ মিলিমিটার বিটুমিনের কথা থাকলেও আমরা ২৭ মিলিমিটার করে দিচ্ছি। সব কিছু নিয়ম মেনেই হচ্ছে। বরং কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তি অনৈতিকভাবে টাকা দাবি করেছিল, না দেওয়ায় তারা এখন অভিযোগ তুলছে।”
তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত তদারকি কর্মকর্তা দায় এড়ানোর চেষ্টা করছেন। এলজিইডির ওয়ার্ক অ্যাসিস্ট্যান্ট উজ্জ্বল হোসাইন বলেন,
“নিম্নমানের খোয়া ব্যবহারের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। প্রকৌশলী স্যারই মূল সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, আমি কেবল তদারকির দায়িত্ব পালন করি।”
প্রকৌশল বিভাগ বলছে, অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাজাপুর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী অভিজিৎ মণ্ডল বলেন, “কাজে যদি কোনো ধরনের অনিয়ম হয়ে থাকে, তাহলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
ঝালকাঠি জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহীদুল ইসলাম সরকার জানান, “রাস্তার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের মৌখিক অভিযোগ পাওয়ার পরপরই উপজেলা প্রকৌশলীসহ একজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে সরেজমিনে পাঠানো হয়েছে। এখনো পর্যন্ত ঠিকাদারকে কোনো বিল দেওয়া হয়নি। তদন্তে অনিয়ম প্রমাণিত হলে এক টাকাও বিল দেওয়া হবে না।”