এসব কি হচ্ছে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে?

একটি দেশের মেরুদন্ড ভেঙ্গে দেয়ার জন্য তার মেধাবী সন্তানদের শেষ করে দেয়াই যথেষ্ঠ। মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে পাকিস্তানিরা সেটিই করেছে। দেশের মেধাবী সূর্য সন্তানদের খুঁজে খুঁজে হত্যা করে দেয়া হয় গণকবর। দেশের জন্য প্রাণ দেওয়া এসব বীরেদের স্মৃতি ধরে রাখতেই রাজধানীর রায়ের বাজারে নির্মিত হয় বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ।

স্থপতি ফরিদউদ্দীন আহমেদ এবং স্থপতি জামি-আল-শফি’র নকশায় তৈরি করা স্থাপত্যটি এখন প্রায় পরিত্যক্ত। ১৪ই ডিসেম্বর ব্যতীত এর রক্ষণাবেক্ষণে দেখা যায় না কোন তদারকি। দেশের ইতিহাস ঐতিহ্যকে জানতে পর্যটকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে স্থানটি থাকলেও নেই সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা। তাইতো হরহামেশাই এখানে দেখা মিলে নানা অপকর্মের। বিভিন্ন বয়সী ছেলে মেয়েদের অবাধ চলাফেরা এখানকার নিত্যদিনের চিত্র। পবিত্র এ স্থানটি এখন মাদক সেবীদের আশ্রয়স্থল। আর এসবের জন্যেই বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ হারাচ্ছে তার নিজস্ব গৌরব। নানা অনিয়ম আর অব্যস্থাপনার জন্যে দেশের সাধারন মানুষ আসেন না দেশের সূর্য সন্তানদের দেখতে।

এছাড়াও বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যবর্তী সময়টায় বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ভীড় করে প্রেমিক যুগল। শালীনতার মাত্রা অতিক্রম করে তাদের কর্মকাণ্ড। সন্ধ্যার পরে স্মৃতিস্তম্ভের পাশের কবরস্থানেও চলে অনৈতিক কর্মকান্ড, পরিণত হয় মাদকের অভয়ারণ্যে।

বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের মূল ফটকের সামনে ময়লার স্তুপ দেখে ভাবার উপায় নেই যে এখানে শায়িত আছে ড. গোবিন্দচন্দ্র দেব, মুনীর চৌধুরী, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, শহীদুল্লা কায়সার, ডা. ফজলে রাব্বীসহ এদেশের প্রথম সারির অনেক বুদ্ধিজীবী।

দূর থেকে তাকালে দেখা যাবে প্রাচীরের সামনে পানির মধ্যে অবস্থিত কালো গ্রানাইট স্তম্ভ যা বিষাদের প্রতিনিধিত্ব করে। আর লাল ইট দিয়ে পুরো স্থাপত্যটি তৈরি করা হয়েছে , যা নির্যাতনের পর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শরীর থেকে ঝরে পড়া রক্তের চিহ্ন বহন করে।