রুশাইদ আহমেদ ||
বর্তমান সময়ে বাসা ও অফিসে ইন্টারনেট ব্যবহারের অন্যতম প্রধান মাধ্যম হলো ওয়াই-ফাই। তবে অনেকের মধ্যে একটি উদ্বেগ কাজ করে—ওয়াই-ফাই সিগন্যাল স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কি না, এমনকি ক্যানসারের কারণ হতে পারে কি না।
এই ধারণার সূত্রপাত ২০১১ সালে, যখন ৩০ জন বিজ্ঞানী গবেষণা ছাড়াই তাদের মতামত প্রকাশ করেন। পরে বিষয়টি নিয়ে গবেষণার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। একাধিক গবেষণার পর জানা যায়, ওয়াই-ফাই সিগন্যাল কোনো রোগের কারণ নয়, যদিও অনেকেই এখনো এটি বিশ্বাস করে থাকেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণা
২০১৭ সালে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসার (IARC) ওয়্যারলেস প্রযুক্তির সম্ভাব্য দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে গবেষণা শুরু করে। আড়াই লাখ মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর তথ্য পর্যালোচনার পর ২০১৮ সালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা যায়, দীর্ঘক্ষণ ফোন ব্যবহারের ফলে ব্রেন টিউমারের ঝুঁকি বাড়ে না। একই তথ্য কানাডা সরকারের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটেও উল্লেখ করা হয়েছে।
ওয়াই-ফাই ও বিকিরণ
ওয়াই-ফাই সিগন্যাল রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার করে, যা নন-আয়নাইজিং বিকিরণ তৈরি করে। এই বিকিরণের শক্তি মানুষের কোষ বা ডিএনএকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য যথেষ্ট নয়। ২ থেকে ৫ গিগাহার্টজ রেঞ্জের এই ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক শক্তি মাইক্রোওয়েভের তরঙ্গের মতো হলেও স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ নয়।
- প্রাণীদের ওপর গবেষণা1
শুধু মানুষের ওপর নয়, প্রাণীদের ওপরও ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের প্রভাব নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে। তবে সেখানেও কোনো ক্ষতিকর প্রভাব পাওয়া যায়নি। বিজ্ঞানীরা একাধিক গবেষণার পর নিশ্চিত হয়েছেন যে, ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের সিগন্যাল স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ নয়। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এটি মানবদেহ বা প্রাণীর কোনো ক্ষতি করে না। তাই ওয়াই-ফাই ব্যবহারে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।