গত এক বছরে দেশে ওষুধের দাম বাড়তে বাড়তে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, যা সাধারণ মানুষের জন্য বিরাট বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি, নতুন করে ভ্যাট যুক্ত হওয়ার ফলে জনগণের ওপর আর্থিক চাপ আরো বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, কাঁচামালের আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ায় উৎপাদন খরচ বেড়েছে, তবে ভোক্তারা বলছেন, এই যুক্তি নৈরাজ্যকে সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করতে পারে না।
উত্তরা আধুনিক মেডিকেল ফার্মেসির সেলিম উদ্দিন, একজন বেসরকারি চাকরিজীবী, জানান, তার মায়ের ডায়াবেটিসের ওষুধের দাম আগে যেখানে ১৫০০ টাকা ছিল, এখন তা ২২০০ টাকা হয়ে গেছে। শাহানা বেগম নামে আরেক গৃহিণী বলছেন, তার স্বামী হার্টের রোগী, এবং তার প্রতিদিনের ওষুধের খরচ প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাপনকে আরও কঠিন করে তুলছে।
ফার্মেসি মালিকরাও অভিযোগ করছেন, কোম্পানিগুলো ইচ্ছামতো দাম বাড়াচ্ছে এবং তাদেরকে বাধ্য হয়ে সেই দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। তারা বলেন, সরকারের উচিত কোম্পানিগুলোর ওপর নজরদারি বাড়ানো।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওষুধের বাজারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে। না হলে, চিকিৎসার খরচ আরো বেড়ে যাবে এবং সাধারণ মানুষ আরো বেশি ভোগান্তিতে পড়বে।
তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে কিছু ওষুধের দাম ৪০ শতাংশ বা তারও বেশি বেড়েছে, যার মধ্যে ব্যথানাশক, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, এবং সাধারণ ঠান্ডাজ্বরের ওষুধের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যথানাশক ওষুধ ‘টোরাক্স’-এর দাম আগস্ট ২০২৪-এ ছিল ৬০০ টাকা, যা বেড়ে ১ হাজার টাকা হয়েছে।
এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশেষজ্ঞরা সরকারের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন, বিশেষত দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য ওষুধের দাম সহনীয় রাখতে বিশেষ নীতি প্রণয়ন করার পরামর্শ দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের পরিচালক ডা. মো. আকতার হোসেন জানিয়েছেন যে, ভ্যাটের বিষয়টি সত্ত্বেও ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর অন্যান্য ব্যয় কমিয়ে ওষুধের দাম কমানোর আলোচনা চলছে।