কমলগঞ্জ উপজেলায় ক্রমেই বাড়ছে ভুট্টা চাষের পরিমাণ। অন্যান্য ফসলের তুলনায় রোগবালাই কম, পরিশ্রমও তুলনামূলক কম—আর ফলন বেশি হওয়ায় কৃষকরা ভুট্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। বিশেষ করে অনাবাদি জমিতে ভুট্টা চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন এখানকার অনেক কৃষক। ভুট্রা লাভজনক ও পুষ্টিসমৃদ্ধ ফসল ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন। ভুট্টা উপজেলার কৃষিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ভুট্টার দানা মানুষের খাদ্য হিসেবে এবং ভুট্টার গাছ ও সবুজ পাতা উন্নতমানের গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। গরু, হাঁস-মুরগি ও মাছের খাদ্য হিসেবেও এর যথেষ্ট চাহিদা আছে।
কমলগঞ্জ উপজেলার কৃষি অফিস বলেন , এ বছর উপজেলায় ৩২ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদ হয়েছে, যা বিগত বছরের তুলনায় অনেক বেশি চাষ করেছে কৃষকরা, এবং সরকারিভাবে বীজ ও সার সরবরাহ করা হয়েছে।
(২০ এপ্রিল) রবিবার সরেজমিনে দেখা যায় রহিমপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক খাজা মিয়া বলেন , ডিসেম্বরের দিকে বীজ বপনের পর ৭১০ দিনের মধ্যেই অঙ্কুরোদ্গম হয়, এবং এরপর নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার করতে হয় , সেচ ও কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। সাধারণত চার থেকে পাঁচ মাসের মধ্যে ফসল ঘরে তোলা যায়।
বর্তমানে তার জমির গাছে মোচা আসতে শুরু করেছে, আর এপ্রিলের শেষ দিকে ফলন আসবে বলে আশা করছেন খাজা মিয়া ।
সিদ্বশ্বরপুর গ্রামের কৃষক দেবাশীষ পাল বলেন ,ফসল বাম্পার হয়েছে যদি খড়া না হতো আরো বেশী ফসল ঘরে তুলতাম পারতাম ।
রামচন্দ্রপুর গ্রামের মশাহিদ মিয়া বলেন , ভুট্রা চাষ আমাদের এদিকে আগে এরকম দেখা যায়নি ৩/৪ বছর ধরে । বাম্পার ফসল হয়েছে বলে অনেকে এখন ভুট্রা চাষ করতে চাই।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আপন পাল বলেন , বীজ বপনের ২০–২৫ দিন পর থেকে প্রায় ৯০ দিন পর্যন্ত চার দফা সেচ দেওয়া প্রয়োজন হয়। মাঝে মাঝে পাতার দাগ, মোচা বা দানা পঁচা, কাণ্ড পঁচা ও পোকামাকড়ের আক্রমণ হতে পারে, যা ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক প্রয়োগে দমনযোগ্য।
সঠিক পরিচর্যায় করলে, কন পরিশ্রমে দ্বিগুণ লাভ করা সম্ভাবনা রয়েছে । রহিমপুর ইউনিয়নে ৬ হেক্টর জমিতে ভুট্রা চাষ হয়েছে এবার।
কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার রায় বলেন, প্রথমদিকে কৃষকরা আগ্রহ দেখাননি ভুট্রা চাষ করতে। এখন কৃষকরা নিজেরা আগ্রহ নিয়ে চাষ করছেন এবং কৃষি অফিস তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা দিচ্ছে। দিনে দিনে চাষীর সংখ্যা বাড়ছে। এবছর উপজেলায় ৩২ হেক্টর জমিতে ভুট্রার ভাল ফলন হয়েছে।