সংবিধান সংস্কার কমিশন বাংলাদেশের সংবিধানে ‘বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসেবে বাঙালি’—এই ধারা বিলুপ্ত করার সুপারিশ করেছে।
এর ফলে, বাঙালিরা তাদের জাতিগত পরিচয়ে বাঙালি হিসেবে পরিচিত হতে পারবে না, যা নিয়ে বিভিন্ন মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত যে, জাতি হিসেবে পরিচিতির ধারণা নাগরিক পরিচয়ের উপরে স্থান পেতে পারে না, সেই ধারণা বাস্তবতার বিপরীতে চলতে পারে।
সংবিধান সংস্কার কমিশন দেশের জনগণের পরিচয়ে নতুন একটি কাঠামো প্রস্তাব করেছে, যা অনেকটাই বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না। এমন একটি প্রস্তাবনা, যা জাতিগত পরিচয়কে নাগরিক পরিচয়ে আত্তীকৃত করার প্রচেষ্টা, তা বহু জাতির সমন্বয়ে গঠিত রাষ্ট্রের ধারণা এবং এক জাতির বহু রাষ্ট্র হওয়ার প্রেক্ষাপটেও বিপরীত।
বাঙালি জাতীয়তাবাদ একটি জাতি ও ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদ। এটি পাকিস্তানি বা ভারতীয় নয়, বরং নিজস্ব ইতিহাস ও সংগ্রামের অংশ। বাংলার ভাষা রক্ষায় যে সংগ্রাম হয়েছে, তা একদিকে যেমন জাতির ভাষা হয়ে উঠেছে, তেমনি এটি একটি জাতিগত পরিচয়ও প্রদান করেছে। সংবিধান সংস্কার কমিশনের এই প্রস্তাব, যা বাঙালি জাতি বা জাতীয়তাবাদকে সাংবিধানিকভাবে মুছে ফেলার প্রস্তাব করছে, তা জাতির অস্তিত্বের সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক বলে মত প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জাতীয়তাবাদ হল সমগ্র জনগণের মুক্তির সংগ্রাম, একটি নিরন্তর লড়াই, যা জাতির ঐক্য এবং পরিচয়ের অবিচ্ছেদ্য অংশ।