মোহাম্মদ নিলয়, ক্রীড়া প্রতিবেদক
বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ব্যক্তিগত পুরস্কার ব্যালন ডি’অর ২০২৫ সালের ট্রফি কার হাতে উঠবে, তা নিয়ে শুরু হয়ে গেছে নানা জল্পনা-কল্পনা। এক সময় মেসি-রোনালদোর দ্বৈরথে আটকে থাকা এই পুরস্কার এখন নতুন প্রতিভাদের নিয়ে জমে উঠেছে। এবার তালিকায় উঠে এসেছে একাধিক নতুন নাম, যারা মৌসুমজুড়ে মাঠে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের দেখিয়ে নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করে তুলেছে।
এই তালিকার শীর্ষেই রয়েছেন বার্সেলোনার ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার রাফিনহা। চলতি মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে তিনি করেছেন ১২টি গোল। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে তার গোল এবং অ্যাসিস্ট সংখ্যা ৫২ ছাড়িয়ে গেছে। তার নৈপুণ্যেই বার্সেলোনা কোপা দেল রে ঘরে তুলেছে এবং এখনো লা লিগা ও চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপার লড়াইয়ে দারুণ ভাবেই টিকে আছে। ফুটবল বিশ্লেষকদের মতে, যদি বার্সা মৌসুম শেষ করে অন্তত একটি বড় ট্রফি নিয়ে, তাহলে রাফিনহার হাতে ব্যালন ডি’অর ওঠার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি।
তবে প্রতিযোগিতায় একা নন রাফিনহা। তার বড় প্রতিদ্বন্দ্বী পিএসজির ওসমান ডেম্বেলে। ফরাসি এই ফরোয়ার্ড চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত করেছেন ৩৫টি গোল এবং লিগ ১ শিরোপা জয়েও রেখেছেন বড় অবদান। ডেম্বেলের পারফরম্যান্স বিশেষ করে ইউরোপিয়ান ম্যাচগুলোতে ছিল চোখে পড়ার মতো। যদি পিএসজি এই মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতে, তবে ব্যালন ডি’অরের দৌড়ে তার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
এই তালিকায় আরেকটি ব্যতিক্রমী নাম হলো লামিন ইয়ামাল। মাত্র ১৭ বছর বয়সে ব্যালন ডি’অরের আলোচনায় উঠে আসা এই তরুণ ইতোমধ্যেই জিতেছেন কপা ট্রফি। বার্সার হয়ে নিয়মিত খেলছেন এবং গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোতে প্রভাব রেখেছেন। বয়স তার পক্ষে না হলেও সামগ্রিক পারফরম্যান্স তাকে রাখছে আলোচনার কেন্দ্রে।
এছাড়া আলোচনায় আছেন লিভারপুলের মোহাম্মদ সালাহ, রিয়াল মাদ্রিদের কিলিয়ান এমবাপে এবং বার্সেলোনার অভিজ্ঞ স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানডোভস্কি। সালাহ ৩২ গোল ও ২২টি অ্যাসিস্ট করেছেন, তবে লিভারপুলের ইউরোপীয় ব্যর্থতা তার সম্ভাবনা কমিয়ে দিয়েছে। একই অবস্থা এমবাপেরও। তিনি ৩২টি গোল করলেও রিয়াল মাদ্রিদ চ্যাম্পিয়নস লিগ ও কোপা দেল রে থেকে ছিটকে গেছে। বয়সের ভারে পড়লেও লেভানডোভস্কি এখনো গোল করে যাচ্ছেন ধারাবাহিকভাবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় দাবিদার রাফিনহা। তবে মৌসুমের শেষ ভাগে যদি পিএসজি বা অন্য কেউ ইউরোপীয় শিরোপা জেতে, তাহলে চিত্র বদলে যেতে পারে। ব্যালন ডি’অরের মতো পুরস্কার কেবল ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স নয়, দলের অর্জনের সঙ্গেও ওতপ্রোতভাবে জড়িত।