ভারত শাসিত কাশ্মীরের বিখ্যাত ডাল লেক ভয়াবহ শীতের কারণে পুরোপুরি জমে গেছে। তীব্র শীতের ফলে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে যাওয়ায় এই অঞ্চলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
বিশেষ করে শ্রীনগরে গত ৫০ বছরের মধ্যে এ বছর সবচেয়ে বেশি ঠান্ডা পড়েছে।
স্থানীয়দের মতে, ২২ ডিসেম্বর সকালে তাপমাত্রা মাইনাস ৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে, যার ফলে ডাল লেকের পানি বরফে পরিণত হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে লেকের নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে এবং পর্যটকরা বরফ দেখার আনন্দ উপভোগ করলেও স্থানীয় বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগে আছেন।
এছাড়া, তীব্র শৈত্যপ্রবাহের কারণে কাশ্মীরের বিভিন্ন অঞ্চলে পানির সরবরাহেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। পাইপলাইনের পানি জমে গিয়ে তাদের ব্যবহারে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে, এমনকি অনেক স্থানে মোটরও জমে গেছে। শীতের তীব্রতা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, চলাফেরা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা শীতে নিজেদের উষ্ণ রাখতে আগুন পোহাচ্ছেন, কিন্তু তা যথেষ্ট নয়।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, কাশ্মীরে শীতের তীব্রতা আগামী ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। শীতের এই প্রকোপ কেবল কাশ্মীরেই সীমাবদ্ধ নয়, উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলেও তীব্র শৈত্যপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এর ফলে, রাস্তার মোড়ে মোড়ে বাসিন্দাদের আগুন পোহাতে দেখা যাচ্ছে।
শ্রীনগরসহ কাশ্মীরের অন্যান্য অঞ্চলের স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, শীতের কারণে তাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। যেখানে সাধারণত শীত মৌসুমে একটু স্বস্তি পাওয়া যায়, সেখানে এবার শীতের তীব্রতা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। বিশেষত গরীব ও নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য এই শীত আরও কষ্টকর হয়ে উঠেছে।
কাস্মীরের পর্যটন শিল্পও শীতের প্রভাবে কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। যদিও পর্যটকরা বরফ দেখতে আসছেন, তবুও তীব্র শীতের কারণে তারা স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করতে পারছেন না। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এই ধরনের শীতের প্রকোপে তাদের দৈনন্দিন কাজকর্ম চালিয়ে যেতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
অবশ্য, আবহাওয়া বিভাগের আশঙ্কা রয়েছে যে, শীতের প্রকোপ আরও বাড়তে পারে এবং আগামী দিনগুলিতে কাশ্মীরের তাপমাত্রা আরও নিচে নামতে পারে। তাই স্থানীয় প্রশাসন ও সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো শীতকালীন প্রস্তুতি আরও জোরদার করতে কাজ করছে।
আরএস//বিএন