কুমড়া অত্যন্ত উপাদেয় সবজি হিসেবে খাওয়া হয় আমাদের দেশে। তবে এর সঙ্গে সঙ্গে যে কুমড়ার ফুলও অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু, তা জানেন না অনেকেই।
উজ্জ্বল রঙের কুমড়া ফুল সিদ্ধ করে, বেটে ভর্তা করে, কিংবা ভেজে ও রান্না করে খাওয়া যায়। এমনকি কাঁচাও খাওয়া সম্ভব এই ফুল। বিশেষ করে, বেসনে ডুবিয়ে মচমচে করে ভাজা কুমড়া ফুল বেশ জনপ্রিয় একটি খাবার ভোজনরসিকদের কাছে।
কুমড়া ফুলে ক্যালরির পরিমাণ কম থাকায় ও ফ্যাট না থাকায় এটি সুস্বাস্থ্যের জন্য উপযোগী। এতে সামান্য পরিমাণ প্রোটিন থাকলেও ফসফরাস, আয়রন, সেলেনিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়ামসহ বিভিন্ন খনিজ ও ভিটামিন বি১, বি২, বি৬ প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এসব উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার সমাধানে সহায়ক।
কুমড়া ফুলের উপকারিতা
-
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: কুমড়া ফুলে থাকা ভিটামিন সি শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে। এটি সর্দি-কাশি প্রতিরোধে সহায়তা করে এবং আয়রনের শোষণ বাড়িয়ে বিভিন্ন রোগ-জীবাণুর সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
-
ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস সংক্রমণ রোধ: কুমড়া ফুল শরীরে ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে গরমকালে সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বলে মত পুষ্টিবিদদের।
-
পাচনক্রিয়া উন্নত করে: কুমড়া ফুলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় এটি হজমে সহায়তা করে অনেক। এর পাশাপাশি, গ্যাস, বদহজম ও পেটে ভারী লাগার মতো সমস্যার সমাধান করে। তবে সে ক্ষেত্রে, কুমড়া ফুলকে অবশ্যই অল্প তেল সহযোগে রাঁধতে হবে।
-
ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষা: অধিক সংখ্যায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকার কারণে কুমড়া ফুল ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও কাজ এই ফুল।
-
চোখের যত্ন: ভিটামিন এ সমৃদ্ধ কুমড়া ফুল চোখের জন্য উপকারী। শিশু এবং বয়োবৃদ্ধদের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখার ক্ষেত্রে তাই এটি সহায়ক হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
-
হাড় মজবুত করে: কুমড়া ফুলে থাকা ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস হাড়ের গঠন মজবুত করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ফুল হাড় ক্ষয় এবং অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধেও ইতিবাচক সহায়তা করতে সক্ষম।
এত উপকারী গুণাগুণ থাকায় কুমড়া ফুল খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা শরীরের সামগ্রিক সুস্থতার জন্য দারুণ উপকারী হতে পারে। তাই ফুরসত পেলেই চট করে কুমড়া ফুলের নানা রেসিপির অনুসরণ করতে পারেন ভোজনরসিকেরা।