চার দশকেরও বেশি সময় ধরে লোকসংগীতের জগতে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন মমতাজ বেগম। সংগীতের পাশাপাশি রাজনীতিতেও তিনি সক্রিয় ছিলেন। সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য হিসেবে তাঁর সংসদীয় যাত্রা শুরু হয়, এরপর সরাসরি নির্বাচনেও বিজয়ী হয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে মমতাজের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। গত সাত মাস ধরে তাঁকে কোনো অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি।
মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরের জয়মণ্ডপে মমতাজের বাড়ি এক সময় মানুষের পদচারণায় মুখর থাকলেও এখন সেখানে নীরবতা বিরাজ করছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, অনেক দিন ধরে মমতাজকে বাড়িতে দেখা যায়নি। এমনকি তাঁর ব্যবহৃত গাড়িটিও অনেকদিন ধরে দেখা যাচ্ছে না। বাড়ির নিরাপত্তারক্ষীও জানেন না তিনি কোথায় আছেন।
মমতাজের ব্যবহৃত দুটি ফোন নম্বর বন্ধ, তিনি কোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সক্রিয় নন। তাঁর ফেসবুক আইডি গত বছরের সেপ্টেম্বরের পর থেকে আর ব্যবহার করা হয়নি। সর্বশেষ তিনি মেয়ের সঙ্গে একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন, যেখানে মায়ের কথা বলে আবেগাপ্লুত হয়ে কেঁদেছিলেন। তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজেও সর্বশেষ পোস্ট ছিল ১৩ অক্টোবর, যেখানে তিনি ‘আমার হাত বান্ধিবি, পা বান্ধিবি, মন বান্ধিবি কেমনে…’ গানটি গেয়েছিলেন। গানটি প্রকাশের পর ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল এবং লাখো মানুষ এতে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল।
২০০৮ সালে সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য হিসেবে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন মমতাজ। ২০১৮ সালে মানিকগঞ্জ-২ আসন থেকে সরাসরি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদের কাছে পরাজিত হন। নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকে রাজনীতিতে খুব একটা সক্রিয় দেখা যায়নি তাঁকে, যদিও গানে তিনি ব্যস্ত ছিলেন।
এর আগে সংসদে শেখ হাসিনাকে নিয়ে গান গেয়ে সমালোচিত হয়েছিলেন মমতাজ। একইভাবে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর এক বক্তব্যও সামাজিক মাধ্যমে ট্রলের শিকার হয়। নির্বাচনে হারের পর তিনি যেন একেবারেই অন্তরালে চলে গেছেন, যা নিয়ে ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের মধ্যে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।