খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন হুলের জলের সমস্যা যেন পিছু ছাড়ছে না। আবারও এই হলের এক ছাত্র, স্কাল্পচার ডিসিপ্লিনের শ্রীকান্ত কুমার, দূষিত জল খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, হলের কলের জল পান করার পরেই তার পেটে খুব ব্যথা শুরু হয়। শ্রীকান্ত আরও বলেন, “জলে লালচে রঙের পোকা দেখা গেছে এবং তাতে দুর্গন্ধও ছিল। মনে হয় জল পরিষ্কার করার জন্য যে ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করা হয়, তা ঠিকমতো কাজ করছে না। তাই জল পুরোপুরি পরিষ্কার হচ্ছে না।”
পদার্থ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের ছাত্র মুক্তাদির রাহিন বলেন, “এই ঘটনা প্রথমবার নয়। এর আগেও অনেক ছাত্র জলের সমস্যার জন্য অসুস্থ হয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এখনও কোনও কাজের মতো ব্যবস্থা নেয়নি। জল তো জীবন, আমরা এর একটা ভালো সমাধান চাই।”
শুধু জলের সমস্যাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসার ব্যবস্থাও ভালো না থাকায় ছাত্রদের কষ্ট আরও বাড়ছে। সামিক স্বাধীন নামে এক ছাত্র জানান, “গতকাল রাতে যখন আমরা শ্রীকান্তকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে যাই, তখন সেখানে তেমন কোনও ডাক্তার বা নার্স ছিল না। একজন কর্মকর্তা ছিলেন, কিন্তু তিনি বলেন তার ডিউটি রাত ১০টায় শেষ হয়ে যায়। তাহলে রাত ১০টার পরে কেউ অসুস্থ হলে কি তার চিকিৎসার অধিকার নেই? অসুস্থতা তো সময় মেনে আসে না!”
ঘটনার জায়গায় উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. মো. নাজমুস সাদাত বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমরাও ভাবছি। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই চিকিৎসার সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। আমি কাল রাতেও দেখতে গিয়েছিলাম এবং মেডিকেলে এসে সমস্যাগুলো নিজের চোখে দেখেছি। তাড়াতাড়ি কিছু করার চেষ্টা করব।”
জলের সমস্যা নিয়ে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন হলের প্রধান প্রফেসর ড. মো. শফিকুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, “আমরা পাঁচটি হলে জল ফিল্টার বসানোর কাজ শুরু করেছি। আজ বিকেলেই জিনিসপত্র চলে আসবে। আমার হলে ছাত্র বেশি থাকায় দায়িত্বও বেশি। গতকাল রাত তিনটা পর্যন্ত আমি শ্রীকান্তের সাথে সিটি মেডিকেলে ছিলাম এবং তার চিকিৎসার সব ব্যবস্থা করেছি। আজ সকালেও আমি তার খবর নিয়েছি। জলের সমস্যা নিয়ে আমিও চিন্তিত। যেহেতু কাজ চলছে, আশা করছি তাড়াতাড়ি এর একটা স্থায়ী সমাধান হবে। ছাত্রদের সাহায্য চাই।”