ফাল্গুন মাসে দিনের বেলা গরমের তীব্রতা বাড়তে শুরু করেছে, যা শরীরে নানা অস্বস্তি তৈরি করতে পারে। এ সময় খাদ্যতালিকায় পুষ্টিকর খাবার রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, গরমে সুস্থ থাকতে টক দই অত্যন্ত কার্যকরী হতে পারে। তবে কখন এটি খাওয়া উচিত, সে বিষয়ে অনেকের মধ্যে বিভ্রান্তি রয়েছে।
পুষ্টিবিদ পল্লবী চট্টোপাধ্যায়ের মতে, টক দই একটি প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার, যা দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি৬ ও বি১২, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, জিঙ্ক ও সেলেনিয়ামের মতো উপাদান রয়েছে, যা শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগায়।
এই খাবার অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, হজমশক্তি বাড়ায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এটি স্ট্রেস কমাতেও কার্যকর। টক দইয়ে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে, খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং দীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকি কমায়।
অনেকের মনে আবার প্রশ্ন জাগে, টক দই কখন খাওয়া উচিত? পুষ্টিবিদদের মতে, সকালের নাশতার পর এটি খাওয়া সবচেয়ে ভালো, কারণ এটি পেট ঠান্ডা রাখে ও হজমে সহায়তা করে। তবে বিকেলের পর এটি খেলে কিছু সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। দইয়ে থাকা হিস্টামিন মিউকাস তৈরি করে, যা সর্দি-কাশির প্রবণতা বাড়াতে পারে। এ ছাড়া বিকেলের পর টক দই খাওয়া গাঁটের ব্যথা বা শ্বাসকষ্টের কারণ হতে পারে।
তবে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ রুদ্রজিৎ পাল ভিন্নমত পোষণ করেন। তার মতে, টক দই দিনে যেকোনো সময় খাওয়া যেতে পারে এবং এটি উপকারীতা হারায় না। কারণ এটি প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ, যা পরিপাকতন্ত্রের জন্য ভালো।
সর্বোপরি, গরমের দিনে সুস্থ থাকতে টক দই খাদ্যতালিকায় রাখা যেতে পারে। তবে ব্যক্তিগত শারীরিক অবস্থা ও স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে কখন খাওয়া উপযুক্ত, তা নির্ধারণ করাই ভালো।