জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর গাজার জনগণকে অন্য দেশে স্থানান্তরের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি তাদের এই পরিকল্পনাকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন’ বলে মন্তব্য করেছেন।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) তুরস্কের সরকারি সংবাদ সংস্থা আনাদোলুর একটি প্রশ্নের জবাবে গুতেরেস বলেন, “ফিলিস্তিনিদের অবশ্যই একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রে বসবাস করতে হবে, যা একটি ইসরায়েলি রাষ্ট্রের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠিত হবে। এটি একমাত্র সমাধান, যা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক স্থানান্তর করা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী।”
নেতানিয়াহুর গাজার জনগণকে ‘অবরুদ্ধ’ রাখার দাবি সম্পর্কে গুতেরেস বলেন, গাজার জনগণের জন্য জরুরি চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার জন্য আরও পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। তিনি বলেন, “চিকিৎসা সেবা বৃদ্ধি করার জন্য সবকিছু করতে হবে।”
গুতেরেস ‘গণহত্যা’ শব্দ ব্যবহার বিষয়ে বলেন, “পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, এখন শব্দের ব্যবহার নিয়ে ভাবার সময় নয়।” তিনি আরও বলেন, গাজায় গণহত্যা ঘটছে কিনা তা নির্ধারণের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) উপযুক্ত সংস্থা। তিনি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানান।
জাতিসংঘ প্রধান আরো বলেন, “ফিলিস্তিনিদের চলমান দুর্ভোগ একটি ‘সম্মিলিত শাস্তি’ এবং তা কোনোভাবেই ন্যায্য হতে পারে না।” তিনি ইসরায়েলের প্রতি এই ধরনের অনুশীলন অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানান।
এদিকে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় ৫০ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ১ লাখ ১৫ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
গাজার পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত নভেম্বরে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল। এছাড়া গাজায় তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা চলছে।