আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পবিত্র ঈদুল আজহার আনন্দে যখন বিশ্বজুড়ে মুসলমানরা পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছেন, ঠিক তখনই রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা।
ঈদের দ্বিতীয় দিন শনিবারও (৭ জুন) ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় উপত্যকাটিতে অন্তত ২২ জন ফিলিস্তিনির প্রাণহানির খবর দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এএফপি এবং আল জাজিরা।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের পশ্চিমে অবস্থিত একটি আশ্রয়কেন্দ্রে গোলাবর্ষণ করে ইসরায়েল। সেখানে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের একটি পরিবারের চার সদস্যসহ অন্তত ১২ জন নিহত হন।
এ ঘটনায় আহত হন আরও অন্তত ৪০ জন। এটি এমন একটি এলাকা, যেখানে যুদ্ধ থেকে বাঁচতে আশ্রয় নিয়েছিলেন অসংখ্য সাধারণ মানুষ। তবে বাকি ১০ জন নিহতের ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কিছু উল্লেখ করেনি এএফপি।
অন্য দিকে, কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, শনিবার ভোর থেকে স্থানীয় সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত গাজার বিভিন্ন স্থানে চালানো হামলায় মোট নিহতের সংখ্যা ২২-এ পৌঁছেছে। বিভিন্ন হাসপাতালে জরুরি বিভাগে উপচে পড়া ভিড় এবং ধারাবাহিক আহতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় মৃতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ দিকে, ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সূত্রের বরাতে জানা গেছে, এই হামলায় হতাহতদের বেশিরভাগই সাধারণ মানুষ এবং অনেক শিশু ও নারীও আহতদের তালিকায় রয়েছেন।
এএফপির সংগ্রহ করা তথ্যানুসারে, গত ২৭ মে থেকে এ পর্যন্ত গাজায় মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১৫ জনে। আহত হয়েছেন অন্তত ৫৮০ জন। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ৯ জন, যাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা কেউ জানে না।
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার ঝড় উঠলেও এখন পর্যন্ত সেভাবে কোনো কার্যকরী হস্তক্ষেপ দেখা যায়নি। জাতিসংঘ, ওআইসি ও অন্যান্য মানবাধিকার সংগঠন এই হামলাগুলোকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে অভিহিত করলেও বাস্তবিক প্রতিরোধ বা শান্তি প্রতিষ্ঠার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া গাজা যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজারের ওপর বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ সময়, আহত এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এলাকাটির আরও কয়েক লাখ বাসিন্দা।
দীর্ঘদিন ধরে সংঘাত এবং অবরোধ অব্যাহত থাকায় এলাকাটিতে ইতিমধ্যে দেখা দিয়েছে তুমুল খাদ্য ও ত্রাণ সংকট। শীঘ্রই পদক্ষেপ না নিলে অঞ্চলটিতে ব্যাপক মানবিক বিপর্যয় ঘটার আশঙ্কা করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা।