“লাশের স্তূপ দেখলে নিজেকে সামলে রাখা যায় না, মনে হয় আমিও গাজায় গিয়ে শহীদ হই” — এভাবেই মনের ভেতরের তীব্র কষ্ট প্রকাশ করছিলেন রংপুরের কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থী রুম্মন ইসলাম। গাজার গণহত্যার প্রতিবাদে রংপুর টাউন হল চত্বরে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। মাথায় বাঁধা ছিল ফিলিস্তিনের পতাকা এবং হাতে ছিল ‘ফ্রি গাজা, ফ্রি প্যালেস্টাইন’ লেখা প্ল্যাকার্ড।
সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে ‘দ্য ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা’ ও ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে রংপুরে এই প্রতিবাদে অংশ নেয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ।
প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে মিছিল নিয়ে এসে জড়ো হয় টাউন হল চত্বরে। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন পোস্টার, ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড বহন করেন এবং ইসরায়েলবিরোধী স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। আবার মজলুম গাজাবাসীর জন্য কান্নায়ও ভেঙে পড়তে দেখা যায় অনেককে।
সমাবেশে বক্তৃতা দেন মহানগর সুজনের সভাপতি খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জু, যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জহির আলম নয়ন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতিসহ আরও অনেকে। বক্তারা বলেন, ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধে মুসলিম বিশ্বের ঐক্য অপরিহার্য, এবং বিশ্ব সম্প্রদায়কে এই গণহত্যা ঠেকাতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।
তারা ইসরায়েলি পণ্যের বয়কট, যুদ্ধাপরাধের বিচার এবং জাতিসংঘ ও ওআইসি’র কাছে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানান।
এ দিন শুধু শিক্ষার্থীরা নয়, রংপুরের সরকারি, বেসরকারি, আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও এই কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করেন।
বিকেল ও সন্ধ্যায় পাড়া-মহল্লার মসজিদ ও মাদ্রাসা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করার ঘোষণাও দেওয়া হয়, যেখানে ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলো অংশ নেবে বলে জানানো হয়েছে।
এই প্রতিবাদ যেন শুধু কণ্ঠস্বরেই সীমাবদ্ধ না থাকে—এমন প্রত্যাশাই ছিল অংশগ্রহণকারীদের চোখে-মুখে।