সাতক্ষীরায় গ্রাহকদের শতকোটি টাকা হাতিয়ে প্রতারণা করে স্বপরিবারে পালিয়ে যাওয়া প্রগতি সঞ্চয় ও ঋণদান কো-অপারেটিভ সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক প্রাণনাথ দাসকে আটক করেছে সদর থানা পুলিশ।
শনিবার ( ২৯ জুন) পুরাতন সাতক্ষীরা এলাকায় তার নিজ বাড়ি থেকে আটক করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত প্রাণনাথ দাস (৪৬) সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার টিকেট গ্রামের মৃত জুড়ন দাসের ছেলে ও বর্তমাসে পুরাতন সাতক্ষীরার বাসিন্দা।
এর আগেও গ্রাহকের শত কোটি টাকা লোপাট করে পালানোর সময় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের গোয়েন্দা পুলিশ (এসডিএফ) এর হাতে আটক হন প্রাণনাথ দাস।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ মুহিদুল ইসলাম আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গ্রাহকের শত কোটি টাকা নিয়ে পালাতোক প্রাণনাথ কে আটক করা হয়েছে। আমাদের কাছে অভিযোগ আছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, প্রাণনাথ দাস ২০০২ সালে রুপালী লাইফ ইনসিওরেন্স নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জেলা ও জেলার বাইরে বেশ কিছু মানুষের সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে বহু টাকা আত্মসাৎ করেন। ২০১২ সালে ১২১ নং সমবায় রেজিষ্ট্রেশন মূলে প্রগতি সঞ্চয় ও ঋণদান কো-অপারেটিভ সোসাইটি খোলেন প্রাণনাথ দাশ। সোসাইটির চেয়ারম্যান হিসেবে নিজের স্ত্রী ইতি রানী বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বড় ভাই বিশ্বনাথ দাশকে নিযুক্ত করে গত ১০ বছরে ডিপিএস ও ফিক্সড ডিপোজিট এর মাধ্যমে শত গ্রাহকদের কাছ থেকে শত কোটি টাকা প্রতারণা করেন।
প্রতারণার টাকা দিয়ে তিনি পুরাতন সাতক্ষীরায় বাড়িসহ গাভায় চার বিঘা জমি, সদুরডাঙিতে দুটি বাড়ি, বুধহাটায় দুটি অফিস, মুন্সিপাড়ায় চার শতক জমি ও পুরাতন সাতক্ষীরায় দুটি শোরুম খোলেন। জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরাতে প্রাণনাথ সাতক্ষীরা মন্দির সমিতির সাংগঠণিক সম্পাদক, বাস মলিক সমিতির সাংগঠণিক সম্পাদকসহ বিভিন্ন সংগঠণের ভাল ভাল পদ অলঙ্কৃত করেন। কুলিয়া ইউপি নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করেন তিনি। এসবের চোখে ফাঁকি দিয়ে গ্রাহকদের শতকোটি টাকা হাতিয়ে প্রতারণা করে স্বপরিবারে পালিয়ে যায় প্রাণনাথ দাস। তবে ভারতে দীর্ঘ তিন মাস জেল খাটার পর গত কয়েক দিন আগে দেশে ফেরেন তিনি। প্রাণনাথ দাসকে আটকের খবর পেয়ে শত শত গ্রাহক থানা চত্বরে ভিড় করে।