চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার সংস্কারের দাবী

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) মেডিকেল সেন্টারে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সামগ্রী নাই। শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) পরিসংখ্যান বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী নাইমা শ্বাসকষ্টে মৃত্যুবরণ করেন। শিক্ষার্থীদের ভাষ্যমতে, চবি মেডিকেল সেন্টারে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সেবা বিদ্যমান ছিলো না। ক্যাম্পাস থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে নেওয়ার পথে চবি মেডিকেল সেন্টার থেকে দেওয়া অক্সিজেন সিলিন্ডারটি পথিমধ্যেই শেষ হয়ে যায়। এরপর চমেকে পৌছালে কর্তব্যরত ডাক্তার নাইমার মৃত্যু নিশ্চিত করেন।

শনিবার (২৬ অক্টোবর ২০২৪) বেলা সাড়ে দশটায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীরা চবি মেডিকেল সেন্টার সংস্কারের দাবীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় হলো একটা রাষ্ট্রের মতো। রাষ্ট্রে যা যা আছে, একটা বিশ্ববিদ্যালয়েও তা আছে। প্রশাসনিক ব্যবস্থা থেকে শুরু করে সবকিছু। শিক্ষার্থীরা হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের জনগণ। রাষ্ট্রের যেমন মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নের দায়িত্ব রয়েছে, তেমনি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোকেও শিক্ষার্থীদের মৌলিক চাহিদা পূরণে এগিয়ে আসতে হয়। হলে আবাসন, ডাইনিংয়ে খাবার এবং মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। চবি মেডিকেল সেন্টার আমাদের চিকিৎসার অধিকার নিশ্চিত করতে ব্যর্থ। যে কারণে শিক্ষার্থীরা এটিকে নাপা সেন্টার নামে ডাকে। ২০১৯ সালে আমি যখন প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ে আসি তখন অসুস্থ হওয়ায় চবি মেডিকেল সেন্টার যেভাবে আমাকে নাপা দিয়েছিলো, ঠিক এখনো সেভাবেই সব সমস্যার সমাধান এখনে নাপাই দেওয়া হচ্ছে৷ ক্যাম্পাসে আবাসন, পুষ্টিকর খাবার ও চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে৷ খাবারের মানের ক্ষেত্রে হল প্রভোস্টদের আন্তরিকতার সাথে এগিয়ে আসতে হবে। এতে শিক্ষার্থীদের বিকাশ সহজতর হবে। আমাদের মেডিকেল সেন্টারের রানিং ম্যানেজমেন্ট কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে চিকিৎসা সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞদের নিয়ে নতুন কমিটি গঠন করতে হবে। এটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালের রূপ দিতে হবে৷ অন্য হাসপাতালের মতো করেই এক্স রে মেশিন, আইসিইউ সহ টেস্টের যাবতীয় সরঞ্জাম যুক্ত করতে হবে। আমাদের মেডিকেল সেন্টারকে আধুনিকায়ন করতে হবে এবং খু্ব দ্রুত সময়ের মাঝে দৃশ্যমান সংস্কার আনতে হবে।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক আব্দুর রহমান বলেন, “আপনারা জানেন চবি মেডিকেল সেন্টারে অক্সিজেন সেবা না পেয়ে আমাদের বোন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এখানে নাপা ছাড়া আর কিছু পাওয়া যায় না। আটাশ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য তারা শুধু নাপাই বরাদ্দ রেখেছে। অবিলম্বে এই নাপা সেন্টারকে সংস্কার করে একটি পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল সেন্টারে রূপ দিতে হবে। দায়িত্বে অবহেলাকারীদের অপসারণ করে যোগ্য দায়িত্বশীল নিয়োগ করতে হবে।”