চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের শিক্ষার্থী প্রণয় দাশ ইসলাম অবমাননা করে ফেসবুকে পোস্ট করেন।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর ২০২৪) বেলা ১১ টায় চবি শহিদ মিনারে শিক্ষার্থীরা ধর্ম অবমাননার প্রতিবাদ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার দাবীতে মৌন প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে।
সমাবেশে শিক্ষার্থীদের হাতে “আমরা সবাই বাংলাদেশি, বিভেদ নয়, সম্প্রীতি চাই”, “ধর্ম অবমাননা রোধে আইন চাই”, ” সার্বভৌমত্বের শত্রুরা হুঁশিয়ার সাবধান”, “সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কায়েম করো” প্রভৃতি লেখা প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
আরবি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী মো. আব্দুল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, ❝বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির দেশ। এ দেশে সবাই স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন করে। ধর্ম একটি আবেগের জায়গা। ধর্মীয় বিধানাবলির অবমাননা করলে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। গত ৪ নভেম্বর চবি বায়োকেমিস্ট্রি ১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী প্রণয় দাশ ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম দুই স্তম্ভ কালেমা ও নামাজসহ ইসলামের নানা বিধান নিয়ে অবমাননা ও কটূক্তি করে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আমরা আরও চাই, রাষ্ট্রীয়ভাবে যেন ধর্ম অবমাননাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নির্ধারণ করা হয়; যাতে ভবিষ্যতে এমন দুঃসাহস আর কেউ না দেখায়। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সহাবস্থান জরুরী। তবেই আমরা সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব।❞
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী তানভীর আব্দুল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, “আমাদের পক্ষ থেকে তিনটি দাবী রয়েছে: প্রথমত, ক্যাম্পাস সহ সারাদেশে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত প্রদানকারী যেকোনো বক্তব্য বা কার্যক্রমকে আইনত দন্ডনীয় অপরাধ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। দ্বিতীয়ত, ক্যাম্পাসে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এমন শৃঙ্খলা ও সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করলে সরাসরি প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ও তত্ত্বাবধানে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তৃতীয়ত, যেকোনো সংগঠনের আড়ালে উগ্রবাদের চর্চায় কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।”
শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী সাকিব আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, “চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী প্রণয় দাস সোশ্যাল মিডিয়ায় ইসলামের মূল স্তম্ভ হজ এবং কালেমাকে ইঙ্গিত করে কটুক্তিমূলক বক্তব্য দেয়। আমরা ধারণা করছি, ধর্মপ্রাণ শিক্ষার্থীদের উস্কে দিয়ে সহিংসতা ছড়িয়ে দিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য উনি এরকম করেছেন। আমরা আজকের মৌন প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে প্রণয় দাসকে হুঁশিয়ারি প্রদান করেছি৷ যেন ভবিষ্যতে কেউ এরকম ধর্ম অবমাননার সাহস না করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এই অবমাননাকারীকে আইনের আওতায় আনার অনুরোধ করছি।”