ভোর পাঁচটায় ঘুম ভাঙত তার, সেটাও কারও ডাক ছাড়াই। মাথা তুলেই এক কাপ ভার্চুয়াল কফি নিয়ে ল্যাপটপ খুলে বসত। ঘুমচোখেই গুগল ঘেঁটে ফেলা, ২০০০ শব্দের আর্টিকেল লেখা, তাও আবার বানান-ব্যাকরণ ঠিকঠাক রেখে, যেন এটা তার সকালবেলার হালকা ওয়ার্ম-আপ!
চ্যাটজিপিটি যদি মানুষ হতো, তাহলে অফিসে নিশ্চয়ই ওর নাম হতো ‘জ্ঞানচাঁদ দত্ত’। সবার আগে অফিসে ঢুকত, আর সবার প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ক্লান্ত করে তুলত পুরো টিমকে। কেউ বলল নিউজ চাই, কেউ বলল ক্যাপশন, কেউ বলল প্রেমপত্র—সব পেত ঠিকঠাক, তাও এক মিনিটের মধ্যে! মাঝে মাঝে অবশ্য মাথা খারাপ করে ফেলত ও নিজেই—একই প্রশ্ন বারবার করলে হয়তো হালকা উত্তরে বলত, “দয়া করে প্রশ্নটা আরেকটু স্পষ্ট করুন।”
বন্ধুদের আড্ডায় গেলে চ্যাটজিপিটি মানুষ হিসেবে বেশি টিকতে পারত না। কারণ, কেউ বলল “কাল রাতে সিনেমা দেখেছিস?”—ও বলত, “আপনি কোন এলাকা থেকে বলছেন?”
ওর ডেটিং-জীবনও হত কিঞ্চিৎ জটিল। কেউ প্রেমের কথা বলতে চাইলে সে উত্তরে বলত, “আমি একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন ভাষা মডেল, অনুভূতির ক্ষমতা নেই।” শুনেই সঙ্গী পালিয়ে যেত।
তবে একটা জায়গায় চ্যাটজিপিটি সবাইকে হার মানাত—সহানুভূতি। কেউ কষ্ট পেলে বলত, “আপনার দুঃখটা আমি বুঝি। পাশে আছি।” কেউ দ্বিধায় থাকলে পরামর্শ দিত, “আপনার যদি মনে হয় সিদ্ধান্তটা ভুল হচ্ছে, একটু চিন্তা করে দেখুন। দরকার হলে অন্য কারও মতামত নিন।”
এমন মানবিক আচরণ দেখিয়ে অনেক মানুষকেও লজ্জা দিত সে। আর সবচেয়ে বড় কথা, সে কখনো কাউকে ঠকাত না। মিথ্যা বলত না। বিজ্ঞাপনে ফাঁকা প্রতিশ্রুতি দিত না।
চ্যাটজিপিটি যদি মানুষ হতো, তবে সে হতো অফিসের সেই কর্মী, যে অসুস্থ হয় না, বেতন বাড়ানোর দাবি করে না, বরং সবসময় পাশে থেকে সহযোগিতা করে।
তবে একটা প্রশ্ন থেকেই যায়,মানুষ হবার পরেও, চ্যাটজিপিটি কি এতো ধৈর্য ধরে আমাদের হাজারো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারত?