রাবি প্রতিনিধি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহকে এক ছাত্রীর সাথে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করা হয়েছে । গত রবিবার (১১মে) সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীদের হাতে আটক হওয়া ভিডিওটি আজ বুধবার (১৪মে) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে ।
জানা গেছে, হেদায়েত উল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’র সদস্য। জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তাকে দেখা গেছে।
আটক হওয়া ওই ছাত্রী ফাইন্যান্স বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে স্নাতকোত্তরের (এমবিএ) বেগম খালেদা জিয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তার স্নাতকে (বিবিএ) একাডেমিক ফলাফলও ভালো ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত রবিবার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের দিন বিকেল ৫টার দিকে ওই ছাত্রীকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অ্যাকাডেমিক ভবনের ৩০৭ নম্বর কক্ষে প্রবেশ করেন মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ। কক্ষে প্রবেশের পর বৈদ্যুতিক বাতি বন্ধ করে দেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী ওই কক্ষের দরজায় কড়া নাড়েন। বেশ কিছুক্ষণ পর শিক্ষক দরজা খুলে দেন। শিক্ষার্থীরা কক্ষে প্রবেশ করে দেখেন, ছাত্রীর ওড়না-হিজাব শরীরে নেই। ছাত্রীর ব্যাগ, সেফটিপিনসহ অনেক কিছু শিক্ষকের টেবিলে ছিল। পাশেই রাখা ছিল বালিশ।
ছাত্ররা ভিডিও করার সময় ওই ছাত্রীর মাথায় একটি রুমাল পরিয়ে মাথা ঢেকে দেন মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ। উপস্থিত শিক্ষার্থীরা তখন জানতে চান, ছাত্রীর মাথায় কেন রুমাল পরিয়ে দেওয়া হচ্ছে? জবাবে শিক্ষক বলেন, ‘সে মেয়ে মানুষ, তাই।’ এ সময় ওই শিক্ষক ও ছাত্রীর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা হয় কক্ষে প্রবেশ করা শিক্ষার্থীদের। পরে বিষয়টি তাদের মধ্যে মীমাংসা হয়।
এবিষয়ে মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি ।
ফাইন্যান্স বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক শিবলী সাদিক বলেন, মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে এর আগেও যৌন হয়রানির রয়েছে । তখন বিভাগের সভাপতি আরেকজন ছিলেন। পরে বিভাগের সভাপতি বসে বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়া হয়। কিন্তু রবিবারে ছাত্রীর সঙ্গে কক্ষে আপত্তিকর অবস্থায় থাকার বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নই বলে তিনি জানান ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহর কক্ষে ছাত্রীকে আপত্তিকর অবস্থায় পাওয়ার বিষয়ে কেউ অভিযোগ দেননি। এবিষয়ে তিনি অবগত নন। তবে অভিযোগ পেলে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত নয়। আমি খোঁজ নিচ্ছি এ বিষয়ে। প্রথমে আমাকে জানতে হবে সেখানে আসলে কি ঘটেছে সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবো।