রুশাইদ আহমেদ: জাতিসংঘের অধীন এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ২টি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক সংস্থার গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্যপদ পেতে নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ। থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত ইউএনইএসসিএপি-র ৮১তম অধিবেশনে এই অর্জন বাংলাদেশের জন্য এক উল্লেখযোগ্য কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বাংলাদেশকে তিন বছরের জন্য এশিয়া-প্যাসিফিক ট্রেনিং সেন্টার অন আইসিটি ফর ডেভেলপমেন্ট (এপিসিআইসিটি) এবং এশিয়া-প্যাসিফিক সেন্টার ফর দ্য ডেভেলপমেন্ট অব ডিজাস্টার ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট (এপিডিআইএম)-এর গভর্নিং কাউন্সিলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেল, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী, নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অর্থ উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এ সময়, ভিডিও বার্তায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতা জোরদার এবং “তিন শূন্য”—দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও নেট কার্বন নিঃসরণ—দূরীকরণের আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী এবং ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকীও অধিবেশনে অংশগ্রহণ করেন।
অধিবেশনে বাংলাদেশের পক্ষে স্মার্ট ও টেকসই নগর উন্নয়ন, প্রযুক্তি ও গবেষণায় আঞ্চলিক সহযোগিতা, জলবায়ু অর্থায়নে প্রবেশাধিকার ও আন্তঃসীমান্ত সমস্যা সমাধানে যৌথ প্রচেষ্টার ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়।
পাশাপাশি, ‘তিন শূন্য’ লক্ষ্য অর্জনে আঞ্চলিক অংশীদারিত্বের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়, যা ড. ইউনূসের বই “A World of Three Zeros” থেকে অনুপ্রাণিত। এ উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ টেকসই, ন্যায্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের দিকে অগ্রসরমাণ একটি দেশ হিসেবে নিজের অবস্থান আরও শক্তিশালী করেছে বলে মত বিশ্লেষকদের।
এ ছাড়া, বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল ইউএনইএসসিএপি নির্বাহী সচিবের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেয়, যেখানে আইসিটি ও আঞ্চলিক সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয় বলে জানা গেছে।
এই অর্জন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের প্রভাব, দূরদর্শী কূটনীতি এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রতি তার প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।