জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণে ঐক্যমতের ভিত্তিতে পথরেখা তৈরি করাই কমিশনের মূল উদ্দেশ্য। তিনি বলেন, এ কাজের দায়িত্ব কেবল কমিশনের নয়; বরং কমিশন একটি সহায়ক ও সমন্বয়কারী ভূমিকায় কাজ করছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সংসদ ভবনের এলডি হলে বাসদের (বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল) সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. রীয়াজ বলেন, জনগণের আকাঙ্ক্ষা যেন রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মকৌশলে প্রতিফলিত হয়, সে লক্ষ্যেই একটি জাতীয় সনদ গঠনের চেষ্টা চলছে। এতে ভবিষ্যতে সকল রাজনৈতিক দল একটি অভিন্ন লক্ষ্য ও দিকনির্দেশনার ভিত্তিতে কাজ করতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, এই উদ্যোগ আসলে জনগণের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ও জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে পরিবর্তনের ধারা সূচিত হয়েছে, তার একটি নির্দিষ্ট কাঠামো নির্মাণের প্রচেষ্টা।
সংলাপের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনেক বিষয়ে ঐক্যমত থাকলেও কিছু বিষয়ে মতভেদ রয়েছে—যা স্বাভাবিক। তবে রাষ্ট্রগঠন এবং পুনর্গঠনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জাতীয় ঐক্য অপরিহার্য। এ কাজ কোনো একক দলের, ব্যক্তির কিংবা সংগঠনের নয়—এটি জনগণের সম্মিলিত দায়িত্ব।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সিভিল সোসাইটি এবং সাধারণ নাগরিকেরা এই প্রক্রিয়ার অংশ। তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে ভিন্নমতের বিষয়গুলো দ্রুত আলোচনা করে সমাধানে পৌঁছাতে হবে, কারণ সময় স্বল্প এবং বাস্তবতা জটিল।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি দীর্ঘ সংগ্রামের ফসল। জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থান শুধু দীর্ঘদিনের ক্ষোভই নয়, বরং জনগণের গভীর প্রত্যাশাও সামনে এনেছে। জনগণ চায়—আর যেন দেশে স্বৈরতন্ত্র পুনরায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে।
এ সময় বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, এই গণ-অভ্যুত্থান দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। বিরোধপূর্ণ বিষয়গুলো রাজনৈতিক সংলাপের মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যের সনদ এমনভাবে তৈরি করতে হবে, যা জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে পূরণ করবে। একই সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলো এবং তাদের মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে—না হলে এসব উদ্যোগ কার্যকর হবে না।