জাবি প্রতিনিধি:সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে শতকরা ৫ শতাংশ কোটা রেখে সংসদে আইন পাসের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও মামলা দায়েরের প্রতিবাদ ও কোটা সংস্কারের এক দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বিক্ষোভ মিছিল ও সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ রবিবার (১৪ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ লেখা একটি ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা।
মিছিলটি শেষ হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গিয়ে।এরপর সেখানে সংহতি সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। সমাবেশে বিভিন্ন বিভাগের বেশকয়েকজন শিক্ষক সংহতি জানান।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘ বিচার চাই বিচার চাই’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘কোটা প্রথা নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’, আমার ভাইয়ের ওপর হামলা কেন?’আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’ সহ নানান স্লোগান দেন।
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, ‘দেশ ও জাতির মঙ্গলের জন্য শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনে আমি সংহতি জানাচ্ছি। রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে নির্বাহী বিভাগের কাছে আমরা প্রত্যাশা করি শিক্ষার্থীদের প্রতি ন্যায় বিচার করা হবে৷ রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে পরিশ্রম করে শিক্ষার্থীরা যা করছে, তা রাষ্ট্রের মঙ্গলের জন্যই করছে৷’
ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দেখে মনে হচ্ছে, তারা ৫২’র ভাষা আন্দোলন ও ৬৯’র গণভ্যত্থানের উত্তসূরী। কোটার উদ্দেশ্য বৈষম্য সৃষ্টি করা নয়। বরং বৈষম্য নির্মূল করা৷ কিন্তু এখন কোটার মাধ্যমে এক ধরনের বৈষম্য সৃষ্টি হচ্ছে৷ তার চেয়ে বড় কথা কোটার মধ্য দিয়ে পুরো দেশকে মেধাশূন্য করা হচ্ছে৷ সুতরাং শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুধুমাত্র চাকরির আন্দোলন নয়, দেশ রক্ষার আন্দোলন৷’
দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, ‘আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে যে বৈষম্য তৈরি করার পায়তারা করছেন, তা বন্ধ করুন। মেধাভিত্তিক, দুর্নীতিমুক্ত ও বৈষম্যমুক্ত একটি সুন্দর বাংলাদেশ তৈরি করার জন্য শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। আমরা শিক্ষার্থীদের এই যৌক্তিক আন্দোলনে সমর্থন জানাচ্ছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন শিক্ষার্থী আহসান লাবীব বলেন, ‘আমাদের দাবি কোটা সংস্কার করে মেধাবীদের সুযোগ দেওয়া৷ কোটা সংস্কার ব্যতীত আমাদের রাজপথ থেকে ওঠানোর কোনো পায়তারা করবেন না, অন্যাথায় আমরা আন্দোলন আরো বেগবান করবো৷’
বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আব্দুর রশিদ বলেন, যৌক্তিক আন্দোলন চলাকালে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে, মামলা দিয়েছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং যারা এই ন্যক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি অতিদ্রুত কোটা সংস্কার করতে হবে।’