জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অটোরিকশা চলাচল বন্ধ হওয়ায় অভ্যন্তরীণ যানবাহন নিয়ে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ যেনো কমছেই না। যা নিয়ে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থী আফসানা রাঁচির মৃত্যুর পর বন্ধ করা হয় অটোরিকশা চলাচল। এরপর যাতায়াতের বিকল্প হিসেবে পায়ে চালিত রিকশা ও শাটল বাস চালু করে। কিন্তু এতেও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে বিঘ্ন কাটেনি। বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে যাতায়াতে আরও দুর্ভোগে পড়েছেন তারা, পায়ে চালিত রিকশায় জন্য গুণতে হয় বাড়তি ভাড়া।
এছাড়াও শাটল বাস চালু করা হলেও এর ফলপ্রসূ ব্যবহার হচ্ছে না বলে জানান শিক্ষার্থীরা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শাটল বাসে প্রতিদিন চল্লিশ হাজার টাকা ব্যয় হলেও তার সুফল পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তূর্য কীর্তনীয়া চন্দন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অটোরিকশা চলাচল দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। এখন রমজান মাস, প্রচণ্ড গরম, রোজা রেখে দূরত্ব অতিক্রম করা আমাদের জন্য কষ্টকর হয়ে উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের চলাচলের সুবিধার জন্য ক্যাম্পাসে অটো-রিকশা পুনরায় চালুর প্রয়োজন। আমরা চাই, প্রশাসন আমাদের কথা শুনুক এবং ক্যাম্পাসে রিকশা চলাচলের অনুমতি দিক।
এর আগে গত বছরের ১৯ শে নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ৫৩ ব্যাচের আফসানা করিম রাচির মৃত্যু হয় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ করে দিলেও এর বিকল্প হিসেবে স্থায়ী সমাধান করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এদিকে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের যাতায়াত ভোগান্তি কমাতে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হবে ইলেকট্রনিক কার্ট গাড়ি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান কারখানার সিনিয়র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মশিউর রহমান। তিনি জানান, মার্চ মাসে পরীক্ষামূলকভাবে কার্ট ভ্যান চালু করা হবে।
তিনি আরোও বলেন, আমাদের ক্যাম্পাসের ভূমি যেহেতু উঁচু – নিচু তাই আমরা পরীক্ষামূলকভাবে চালু কয়েকটি কার্গো চালু করব। কার্গো ৮-১০ সিটের হয়ে থাকে ও এটা পরিবেশবান্ধব। আমাদের এখানে ইতোমধ্যে ২ টি ইলেকট্রনিক গাড়ি চলে আসছে। এগুলো আমরা এক্সপেরিমেন্ট করতেছি। আশা করছি যাতায়াতের একটি স্থায়ী সমাধান হবে।
উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে স্থায়ী শাটল সার্ভিস চালু করার জন্য গঠিত কমিটি এখন পর্যন্ত কয়েকটি মিটিং করেছে এবং বিভিন্ন কোম্পানির সাথে আলোচনা করেছে। ইতোমধ্যে আমরা স্থানীয় একটা কোম্পানির দুটি কার্ট গাড়ি পরীক্ষামূলক ভাবে চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যদিও অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে আমরা আশা করছি আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে আরো তিনটি কার্ট গাড়ি যুক্ত হবে। এবং আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যে সম্পুর্ণভাবে আমরা এই সার্ভিস চালু করতে পারবো বলে আশা করছি।
রবিউল হাসান
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়