ব্রিটেনের লেবার পার্টির সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে তুমুল আলোচনা চলছে।
দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো একের পর এক তার বিরুদ্ধে নানা প্রতিবেদন প্রকাশ করছে।
ডেইলি মেইল অনলাইন এবং দ্য মেইল অন সানডে জানিয়েছে, ব্রিটেনের জাতীয় অপরাধ তদন্ত সংস্থা (এনসিএ) গত মাসে বাংলাদেশ সফর করে। সেখানে তারা দুর্নীতিবিরোধী সংস্থার সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছে, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল টিউলিপের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত।
প্রতিবেদন অনুসারে, এনসিএ টিউলিপ সিদ্দিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও ইমেইল রেকর্ড পর্যালোচনা করতে পারে এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হতে পারে। অভিযোগ রয়েছে যে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ৩.৯ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাৎ করা হয়েছে, যার সঙ্গে তার মা শেখ রেহানা ও পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্য জড়িত থাকতে পারেন।
২০১৩ সালে এই প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যেখানে টিউলিপকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা গিয়েছিল। ব্রিটিশ তদন্ত সংস্থা আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় টিউলিপের বিচার করার প্রস্তাব দিয়েছে বলে একটি সরকারি সূত্র জানিয়েছে।
যুক্তরাজ্যের ২০১০ সালের ঘুষবিরোধী আইনের অধীনে বিদেশে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত ব্যক্তির সর্বোচ্চ দশ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বাংলাদেশি কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে, ঢাকার অনুরোধেই এনসিএ কর্মকর্তারা বাংলাদেশ সফর করেন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর ব্রিটিশ তদন্তকারীরা দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশ সফর করেন। অভিযোগ রয়েছে, তার শাসনামলে প্রতি বছর প্রায় ১৩ বিলিয়ন পাউন্ড বিদেশে পাচার হয়েছে।
ডেইলি মেইল আরও জানায়, রূপপুর প্রকল্প নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসার কয়েকদিন পরেই টিউলিপ সিদ্দিক দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর জানা যায়, লন্ডনের কিংস ক্রসে তার জন্য কেনা একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের মালিকানা নিয়ে তিনি বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছেন।
তবে টিউলিপ সিদ্দিক তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং তার দল লেবার পার্টি বলেছে, এখন পর্যন্ত এনসিএ বা বাংলাদেশি কোনো তদন্ত সংস্থা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। এনসিএ-ও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।