ভারতের বিরোধী দলীয় নেতা রাহুল গান্ধী সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) লোকসভায় অভিযোগ করেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে তিন থেকে চারবার যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছিলেন। তার এ বক্তব্যের পর লোকসভায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
রাহুল গান্ধী বলেন, “আমরা যদি ক্ষমতায় থাকতাম, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেতে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ৩-৪ বার পাঠাতাম না। বরং আমাদের নিজেদের উৎপাদন ব্যবস্থা ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির মাধ্যমে এমন সম্পর্ক তৈরি করতাম, যাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজেই আমাদের এখানে আসতে আগ্রহী হতেন।”
রাহুল গান্ধীর এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজ্জু। তিনি বলেন, “ভারতের পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে ভুল তথ্য ছড়াবেন না। এটি পুরোপুরি ভিত্তিহীন।”
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর রাহুল গান্ধীর বক্তব্যকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন। এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টে তিনি বলেন, “ভারতের প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নেন না। সাধারণত, প্রধানমন্ত্রী নিজে না গিয়ে তার দূতকে পাঠানো হয়।”
তিনি আরও জানান, “রাহুল গান্ধীর দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা। গত বছরের ডিসেম্বরে আমি যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়েছিলাম, তবে ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে মোদির আমন্ত্রণ নিয়ে কোনো মার্কিন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা হয়নি।”
ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন। তার শপথ অনুষ্ঠানে ভারতীয় প্রতিনিধি হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর উপস্থিত ছিলেন। রাহুল গান্ধীর দাবি অনুযায়ী, এই আমন্ত্রণ নিশ্চিত করতেই জয়শঙ্করকে একাধিকবার যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়। তবে বিজেপি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার দাবিকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
রাহুল গান্ধীর মন্তব্যকে কেন্দ্র করে লোকসভায় সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে উত্তপ্ত বিতর্ক হয়। বিজেপির দাবি, ভারতীয় কূটনীতি বহির্বিশ্বে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে, এবং কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের শপথ অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আমন্ত্রণ চাইতে যান না।
এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি ভারতের আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের আগে বিরোধীদের কৌশল হতে পারে, যেখানে কূটনৈতিক সম্পর্ক ও জাতীয় মর্যাদার বিষয়গুলো আলোচনায় আসবে।