বিশেষ প্রতিনিধি: ঈদুল আজহায় ঘরে ফেরা মানুষের চাপে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে শুক্রবার ভোর থেকে শুরু হয়েছে দীর্ঘ যানজট, যা ছড়িয়ে পড়েছে প্রায় ২৫ কিলোমিটারজুড়ে। বিশেষ করে উত্তরের দিকে যাওয়ার পথে অসংখ্য যানবাহন থমকে রয়েছে, যার ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা—শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত কেউই এর বাইরে নয়।
জানা গেছে, বুধবার রাত থেকেই উত্তরের পথে যানবাহনের পরিমাণ অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যায়। সেইসঙ্গে রাতের বিভিন্ন সময় বেশ কয়েকটি গাড়ি বিকল হয়ে পড়ায় ধীরে ধীরে গাড়ির গতি স্তিমিত হয়ে আসে। শুক্রবার সকাল নাগাদ পরিস্থিতি আরও গুরুতর আকার ধারণ করে। তখন দেখা যায়, মহাসড়কে যানবাহন চলছে অত্যন্ত ধীরগতিতে বা একেবারেই বন্ধ হয়ে আছে। এতে বিপাকে পড়েন হাজারো যাত্রী ও চালক।
যানজটের মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে কয়েকটি বিষয়: অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ, সড়কের মাঝপথে একাধিক গাড়ি বিকল হয়ে যাওয়া, এবং একটি বড় ধরনের দুর্ঘটনা। সকালবেলা টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঘারিন্দা এলাকায় একটি মালবাহী ট্রাক উল্টে গিয়ে পুরো রাস্তা আটকে ফেলে। দুর্ঘটনায় তিনজন আহত হন এবং যান চলাচল পুরোপুরি ব্যাহত হয়।
এ ছাড়াও যমুনা সেতুর ওপরে একাধিক গাড়ি বিকল হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। বিকল যানগুলো সরিয়ে নিতে রেকারের সাহায্য নেয়া হলেও, সময়ক্ষেপণের ফলে জট আরও ঘনীভূত হয়। এতে সেতুর দুপাশে হাজার হাজার গাড়ি আটকে যায়। যানবাহনের দীর্ঘ সারিতে আটকে থাকা যাত্রীদের মধ্যে দেখা দেয় ক্লান্তি ও অসন্তোষ।
এলেঙ্গা হাইওয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ শরীফ জানান, মহাসড়কে একাধিক বাস ও অন্যান্য যান বিকল হয়েছে। তিনি আরও বলেন, “যানজট নিরসনে পুলিশ ও সেনাবাহিনী একসঙ্গে কাজ করছে।” তদারকি বাড়ানো হয়েছে এবং ধাপে ধাপে যানবাহনগুলো সরিয়ে নেয়ার কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে, স্থানীয় ও দূরপাল্লার যাত্রীরা জানান, ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকার ফলে অনেকের খাবার, পানি ও ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে। অসুস্থ ও শিশু যাত্রীদের জন্য পরিস্থিতি আরও কষ্টদায়ক হয়ে উঠেছে।
এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। প্রশাসন দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেও, যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে কার্যকর উদ্যোগ কতটা দ্রুত ফল দেবে—তা সময়ই বলে দেবে।