তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ নিচ্ছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চের মধ্যেই এই দলের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ঘটতে পারে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের মুখপাত্র সামান্তা শারমিন। গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা পূরণের লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. সাব্বির আহমেদ মনে করেন, এই নতুন দলের আদর্শিক অবস্থান স্পষ্ট করা জরুরি, যা তাদের জনগণের আস্থা অর্জনে সহায়তা করবে।
গণঅভ্যুত্থান থেকে রাজনীতির পথে
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে দেশজুড়ে গণঅভ্যুত্থানে রাজপথে নামেন ছাত্র, শ্রমিক, দিনমজুর এবং সাধারণ মানুষ। শ্রেণি-পেশার বিভাজন ভুলে তারা স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সাহসিকতার পরিচয় দেন। শেখ হাসিনার পতনের পর আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা অনেক তরুণ রাজনীতিতে সক্রিয় হন। এরপর থেকেই শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের আলোচনা শুরু হয়।
জাতীয় নাগরিক কমিটির কার্যক্রম
আন্দোলনকারীদের নেতৃত্বে জাতীয় নাগরিক কমিটি আত্মপ্রকাশ করে। বর্তমানে সংগঠনটির ১৪৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি কেন্দ্রীয় কমিটি রয়েছে। পাশাপাশি দেশের ৬৭টি থানা ও উপজেলায় প্রতিনিধি কমিটি গঠন করেছে তারা। তরুণদের সংযুক্ত করতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দেশব্যাপী সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। এখন পর্যন্ত ১৭টি জেলা, ৩টি মহানগর, ১টি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেছে সংগঠনটি।
নতুন দলের লক্ষ্য ও নেতৃত্ব
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন জানান, তাদের লক্ষ্য গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা ও তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে একটি নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি তৈরি করা। তরুণদের নেতৃত্বে গঠিত এই দলটি বিদ্যমান বৈষম্য দূর করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়।
সংগঠনের অন্যতম সংগঠক হান্নান মাসউদ জানিয়েছেন, নতুন দল গঠিত হলেও জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিলুপ্ত হবে না। বরং এদের মাধ্যমে দলের কার্যক্রম আরও শক্তিশালী হবে।
তরুণদের স্বপ্ন পূরণে নতুন যাত্রা
সামান্তা শারমিন বলেন, “আমরা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চেতনা ধরে রেখে তরুণদের স্বপ্ন পূরণের জন্য রাজনীতির মাঠে নামছি। আমাদের লক্ষ্য স্বচ্ছ, গণতান্ত্রিক, ও বৈষম্যহীন একটি দেশ গঠন করা।”
তরুণদের এই নতুন উদ্যোগ দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে আশা করছেন বিশ্লেষকরা।