ছাদে পলেস্তারা নেই । বেরিয়ে গেছে ভেতরের রড । এমনি ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষে ক্লাস করতেন প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী আফিফ। একদিন পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে হঠাৎ করেই ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে তার মাথায় । পলেস্তারার বৃহৎ অংশ মাথায় না পড়লেও ছোট টুকরো আফিফের মাথায় এসে পড়ে ।
ঘটনাটি রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের পুরাতন বিজ্ঞান ভবনের ১৩০২ নাম্বার কক্ষের । সেই যাত্রায় আফিফের বৃহৎ ক্ষতি না হলেও বেশ আতঙ্কিত হয়েছিলেন তিনি । এরপর পেড়িয়ে যায় বছর খানেক । কিন্তু সেই কক্ষটির এখনো পুনর্নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি ।
নিরাপত্তার কথা ভেবে বর্তমানে এই কক্ষে পাঠদান না করা হলেও কক্ষটি রীতিমতো খোলা থাকছে । সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় , ১৩০২ নাম্বারের ঝুঁকিপূর্ণ এই কক্ষে অবসর সময় কাটাচ্ছেন বেশ কিছু শিক্ষার্থী । জিজ্ঞেস করা হলে শিক্ষার্থীরা বলেন , এখন এই কক্ষে ক্লাস নেয়া হয়না । তবে রুমটি খোলা আছে তাই বন্ধুরা এসে বসলাম । ‘
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন , ‘ যখন ক্লাস হয়না তখন অবসর সময় কাটাতে কিছু শিক্ষার্থীরা এখানে এসে বসে থাকে । দুর্ঘটনা এড়াতে চাইলে মেরামত না হওয়া পর্যন্ত দরজায় তালা লাগিয়ে রাখাই ভালো । ‘
কক্ষটির ঝুঁকিপূর্ণতার বিষয়ে তিতুমীর কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সাবিনা ইসলাম বলেন ,’ আমরা মেরামতের জন্য দরখাস্ত করেছি । অধ্যক্ষ বলেছেন মেরামতের ব্যবস্থা করবেন । যেহেতু অধ্যক্ষ বলেছেন তাহলে এই বিষয়ে তো আর কথা হতে পারে না । ‘ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও রুমটি খোলা কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন , ‘ আমি এই বিষয়ে কথা বলতে চাই না । ‘
উল্লেখিত বিষয়ে তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ফেরদৌস আড়া বেগম বলেন , ‘ আমাদের উন্নয়নের কাজ চলছে । ঐ কক্ষটি আপাতত বন্ধ আছে । ওখানে ক্লাস নেয়া হয়না । ‘ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও রুমটি নিয়মিত খোলা থাকছে এবং সেখানে শিক্ষার্থীরা প্রবেশ করে বসে থাকে এই তথ্যটি জানালে তিনি আরও বলেন , ‘ আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রাপ্তবয়স্ক । ওরা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী । ওদেরতো হাতে-পায়ে বেঁধে রাখা সম্ভব না । ওদের বলা হয়েছে , নোটিশ করা হয়েছে । তারপরেও তারা সেখানে যদি যায় আর কি করার আছে !
উল্লেখ্য , শিক্ষার্থী সংখ্যায় দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম মহাবিদ্যালয় সরকারি তিতুমীর কলেজের একটি বৃহৎ বিভাগ প্রাণিবিদ্যা । ১৯৯৫ সালে মাস্টার্স প্রিলিমিনারী কোর্স এর মাধ্যমে যাত্রা শুরু এই বিভাগের । বর্তমানে বিভাগটি পুরাতন বিজ্ঞান ভবনের ২য় তলায় অবস্থিত হলেও ড. ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনে ২টি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে । বর্তমানে এই বিভাগে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ১২০০ এবং কর্মরত শিক্ষক ১১ জন।
মো: শফিক খান
সরকারি তিতুমীর কলেজ