জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো নাতিশীতোষ্ণ বাংলাদেশেও এখন বিরাজ করছে চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া। এতে বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে দেশের সর্বস্তরের মানুষ।প্রাণ ওষ্ঠাগত এমন পরিস্থিতিতে অত্যধিক লোডশেডিংয়ের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। এটি দেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় উদ্ভূত এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষাজীবন বিপর্যস্ত হচ্ছে বলে দাবি করছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে গত যথাক্রমে ২৫,২৬, ২৭ ও ২৮ এবং ২৯ এপ্রিল দিনব্যাপী পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে প্রতিদিন গড়ে ৪ থেকে ৬বার লোডশেডিং হচ্ছে এবং প্রতিবার লোডশেডিংয়ের সময়সীমা ১ ঘন্টার কাছাকাছি । কখনও কখনও ২ ঘন্টা ধরেও চলছে লোডশেডিং।ছুটির দিনগুলোতে বেড়ে যায় লোডশেডিংয়ের পরিমাণ। দিনব্যাপী লোডশেডিং হলেও ঠিক দুপুরের পর থেকে বেড়ে যায় লোডশেডিংয়ের পরিমাণ। ক্লাস চলাকালেও একাধিকবার চলে লোডশেডিং।ফলে শীতাতপনিয়ন্ত্রন যন্ত্র বন্ধ রেখেই ক্লাস চালিয়ে যেতে হয় শিক্ষক – শিক্ষার্থীদেরকে। অধিকাংশ সময়েই সন্ধ্যা ও রাত বারটার মধ্যে চলে লোডশেডিং। ফলে আরও বিপাকে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলছেন এসময়ে লোডশেডিং হওয়ায় পড়াশোনা নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদেরকে।এ নিয়ে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ ও সময় কমিয়ে সহনীয় পর্যায়ে আনার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এ নিয়ে বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী কামরুল হাসান বাবু বলেন, একটি পূর্ণাঙ্গ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এতো বিদ্যুৎ বিভ্রাট কিছুতেই কাম্য নয়। সন্ধ্যা ও রাতের লোডশেডিংয়ের সময় আমাদেরকে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়।তখন পড়াশোনা, রাতের খাবারসহ অন্যান্য কাজ থাকে। এছাড়াও সারাদিন ক্লাস,টিউটোরিয়াল, পরীক্ষার চাপ সামলে এসময়টিতেই আমাদের বিশ্রামের প্রয়োজন হয় সবচেয়ে বেশি।সার্বিক পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে অবশ্যই লোডশেডিংয়ের মাত্রা কমিয়ে আনা উচিত।
পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী রেজাউল করিম রেজা বলেন, সারাদিন একটানা অসহনীয় তাপপ্রবাহ মোকাবিলায় নানা স্বাস্থ্যবিধি মেনেও যেখানে আমরা সুস্থ থাকতে পারছিনা সেখানে এমন লোডশেডিং আমাদের জন্য একটি বিড়ম্বনা। আমাদের সুস্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত বিষয়টি আমলে নেয়া।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড আলমগীর কবীর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়টি ন্যাশনাল গ্রিডের সাথে সম্পৃক্ত, একারণে সমন্বয়ের প্রয়োজনে লোডশেডিং হচ্ছে। আমরা ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ শাখায় বিষয়টি জানিয়েছি, আমরা দ্রুত সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করছি।
প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আবদুস সালাম শরীফ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়টি পল্লী বিদ্যুৎ শাখার আওতাভুক্ত। আমরা চাইলে এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনা। সারাদেশেই বিদ্যুৎ সংকটের কারণে আমাদেরকে এ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। আমরা ইতিমধ্যে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসকে বিষয়টি অবগত করেছি। আশা করছি খুব দ্রুত সমস্যাটি সমাধান হবে।
রবিউল হাসান
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়