মানি লন্ডারিং, দুর্নীতি, জালিয়াতি এবং ঘুষের অভিযোগে বিতর্কিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক সিদ্দিকের স্ত্রী ও মেয়ের মাল্টার নাগরিকত্বের আবেদন বাতিল করেছে দেশটির সরকার। শুক্রবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস-এর প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, তারিক সিদ্দিকের স্ত্রী শাহীন সিদ্দিক ও মেয়ে বুশরা সিদ্দিক মাল্টার নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছিলেন। মাল্টার সরকার তাদের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে। শাহীন সিদ্দিক ব্রিটিশ এমপি ও যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের চাচি এবং বুশরা তার চাচাতো বোন। টিউলিপ সিদ্দিক শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে।
প্রথমবার ২০১৩ সালে শাহীন সিদ্দিক মাল্টার নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেন। তবে নাগরিকত্ব প্রক্রিয়ায় জড়িত হেনলি অ্যান্ড পার্টনারস নামে একটি প্রতিষ্ঠান আবেদনটি নাকচ করে। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ঢাকায় অবৈধভাবে জমি দখল করে প্রচ্ছায়া নামক একটি কোম্পানির সঙ্গে শাহীন সিদ্দিকের সম্পৃক্ততা রয়েছে।
দ্বিতীয়বার ২০১৫ সালে শাহীন সিদ্দিক তার মেয়ে বুশরা সিদ্দিককে সঙ্গে নিয়ে যৌথভাবে নাগরিকত্বের আবেদন করেন। আবেদনের জন্য প্রায় ৭ লাখ ইউরো খরচ করার প্রস্তুতির কথা জানালেও, তাদের প্রদত্ত ব্যাংক বিবৃতিতে উল্লেখিত অর্থের উৎস সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য ছিল না।
নথিপত্র থেকে জানা যায়, বুশরা সিদ্দিক ২০১১ সালে প্রচ্ছায়ার পরিচালক ছিলেন। তবে ২০১৫ সালে আবেদনের সময় শাহীন ও বুশরা চট্টগ্রামের দ্য আর্ট প্রেস প্রাইভেট লিমিটেড নামক একটি প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের ব্যবসা হিসেবে দেখান।
২০১৫ সালের শেষের দিকে মাল্টার এক সরকারি তালিকায় তাদের আবেদন খারিজের তথ্য প্রকাশিত হয়। পরে সরকারি প্রজ্ঞাপনে নিশ্চিত করা হয় যে, শাহীন সিদ্দিক ও বুশরা সিদ্দিক কেউই মাল্টার নাগরিকত্ব পাননি।
এর আগে, ২০২৩ সালের আগস্টে বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তারিক সিদ্দিক ও শাহীন সিদ্দিকের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। গুমের ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে তারিক সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সম্প্রতি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।