বাংলাদেশের জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন দেশের চারটি বিভাগের ভিত্তিতে চারটি প্রদেশ গঠনের প্রস্তাবনা বিবেচনা করছে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বাদে, অন্যান্য বিষয়গুলো প্রদেশগুলোর হাতে হস্তান্তরের পক্ষে মতামত দিয়েছে কমিশন।
বুধবার, সংবিধান, নির্বাচন, পুলিশ এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংক্রান্ত সংস্কারের প্রস্তাবসহ তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে। যদিও পুরো প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়নি, কিন্তু কমিশনের সদস্যরা কিছু সম্ভাব্য প্রস্তাবনা তুলে ধরেছেন, যার মধ্যে চারটি প্রদেশ গঠনের বিষয়টিও রয়েছে।
এ বিষয়ে পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানিয়েছে, কমিশনের প্রস্তাবের মধ্যে একটির পরিপ্রেক্ষিতে দেশকে বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে চারটি প্রদেশে বিভক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এগুলো হলো ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী এবং খুলনা। তবে, প্রদেশগুলোর ব্যবস্থাপনা কাঠামো এবং দায়িত্ব কী হবে, সে সম্পর্কে এখনও কোনো স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি।
কমিশনের এক সদস্য জানান, বিষয়টি এখনও আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে এবং কমিশনের সুপারিশ চূড়ান্ত হয়নি। এটি মূলত সংবিধান সংশ্লিষ্ট একটি বিষয়, তাই প্রস্তাবের কাঠামো এখনই বলা সম্ভব নয়।
এ ধরনের প্রদেশ গঠনের আলোচনা নতুন নয়। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন ২০০৭ সালে ‘রাষ্ট্র মেরামতের এখনই সময়’ শীর্ষক লেখায় পাঁচটি প্রদেশ করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তিনি বিকেন্দ্রীকরণের পক্ষপূর্বক পাঁচটি প্রদেশ গঠনের প্রস্তাব দেন, যা দেশের বৃহত্তম জনগণের সেবায় কার্যকর হতে পারে। তবে, স্থানীয় শাসনবিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ এই প্রস্তাবের বিপক্ষে। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ, যেখানে প্রদেশ গঠন নতুন সমস্যার সৃষ্টি করবে।
বর্তমানে বাংলাদেশে আটটি প্রশাসনিক বিভাগ রয়েছে—ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর এবং ময়মনসিংহ। এছাড়া কুমিল্লা এবং ফরিদপুরকে নতুন বিভাগ করার বিষয়ে আলোচনা চলছে।
এছাড়া, ১৫ জানুয়ারি সংবিধান সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের স্বায়ত্তশাসন বৃদ্ধি ও বিচার বিভাগে বিকেন্দ্রীকরণের সুপারিশ করেছে।