গণঅভ্যুত্থানের প্রায় সাত থেকে আট মাস পেরিয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা সরকারের কাছ থেকে নির্বাচনের কোন রোডম্যাপ পাইনি। যত নির্বাচন দেরি হবে, ততই পানি ঘোলা হবে এবং পতিত স্বৈরাচার হাসিনা ও তার দোসররা যাদের কাছে বস্তা বস্তা ভর্তি টাকা আছে, তাদের সুযোগ বেড়ে যাবে।
(২০ মার্চ) বৃহস্পতিবার বিকেলে মৌলভীবাজার সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম নাসের রহমানের আয়োজনে বিএনপি চেয়ারপার্সন আপোষহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি ও দেশ নায়েক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ার পার্সন তারেক রহমান এর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনায় ইফতার ও দোযা মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন তিনি। বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু আরও বলেন, ইসলামের ও তৌহিদী জনতার নামে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে কারো লাভ হবে না। বরং সারা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশে উগ্র ধর্মীয় উত্থান হচ্ছে বলে কুৎসা রটছে।
একইসাথে তিনি দ্রæত জাতীয় নির্বাচনের রোড ম্যাপ ঘোষণার জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এই যে রাস্তাঘাটে যেগুলো বাংলাদেশে প্রচলিত ছিল, সেগুলো বন্ধ করার চেষ্ট করছে একটি মহল। সেটাকে থেকে কেন্দ্র করে আজকে বিশ্বব্যাপী আমাদের সম্বন্ধে নানান রকম কুৎসা রটানো হচ্ছে। ইসলাম একটা বিশ্বধর্ম। ইসলাম শুধু সৌদি আরবের ধর্ম না। সৌদি আরবের যে কালচার সংস্কৃতি, অন্যান্য ইসলামী দেশের আলাদা আলাদা সংস্কৃতি আছে, তেমনি আমাদেরও একটি সাংস্কৃতিক কালচার আছে। একটার সাথে আরেকটার মিল নেই।
সুতরাং ইসলাম হচ্ছে একটা সাম্যের ধর্ম সেখানে আরবীয় সাংস্কৃতির প্রচলন করতে গিয়ে দেশিও সাংস্কৃতিকে ধ্বংস করার চেষ্টাই হচ্ছে। সমাজের মধ্যে বিরোধ তৈরী করা, সমাজের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করা হচ্ছে। যারা এই কাজটি করছে, তারা এই কাজটি করে না ইসলামের সেবা করছে, না মানুষের সেবা করছে। এ সবের মধ্য দিয়ে দেশকে একটা গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের মুক্তি এসেছে কিন্তু এখনো পরিপূর্ণভাবে আসে নাই। বাংলাদেশের মানুষ শত অপেক্ষা করছে, গত আঠারো বছর তারা তাদের ভোট দিতে পারে নাই। তাদের মনোনীত নির্বাচিত সরকার গঠন করতে পারে নাই। দ্রæত নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্শমতা হস্তান্তরের দাবীও জানান তিনি, না হলে আবারও ফেসিষ্ট সরকার মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে। এতে করে ১৫শত মানুষের নানাভাবে জীবন দেয়া বৃথা হবে।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপনের সঞ্চালনায় ও সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম নাসের রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সিলেটের সাবেক সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহŸায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন ও সদস্য আব্দুল মুকিত। উপস্থিত ছিলেন, সাবেক এমপি খালেদা রব্বানী, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী মো. ইয়ামির আলী, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আহমদ বিলাল, আইনজীবি সমিতির আহ্বায়ক এডভোকেট মুজিবুর রহমান মুজিবসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। মাহফিলে খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি ও তারেক রহমানের দীর্ঘায়ূ কামনায় দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা আকিল উদ্দিন। ইফততার ও দোয়া মাহফিলে জেলার সাতটি উপজেলা বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
প্রায় পনেরো বছর পর মৌলভীবাজারে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সাত উপজেলার দলীয় নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন ইফতার ও দোয়া মাহফিলে। এতে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের উপস্থিতি ছিল।