বাংলাদেশে স্টারলিংক চালুর বিষয়ে ইতিবাচক অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানিয়েছেন, আগামী ৯০ দিনের মধ্যে স্টারলিংক আনার চেষ্টা করা হবে এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় আর্থ স্টেশন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
স্টারলিংক মূলত উচ্চমানের ইন্টারনেট সেবা প্রদান করবে, যা লোডশেডিং কিংবা মোবাইল টাওয়ারের ব্যাটারি শেষ হওয়ার মতো সমস্যাগুলোর প্রভাবমুক্ত থাকবে। বর্তমান ফাইবার নেটওয়ার্কের সীমাবদ্ধতার কারণে গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেট সেবার মান কমে যায়, কিন্তু স্টারলিংকের মাধ্যমে এটি উন্নত হবে।
দেশে প্রায় ৬৫% টেলিযোগাযোগ সেবা এখনো ফাইবার সংযোগের বাইরে, যেখানে সীমিত ধারণক্ষমতার মাইক্রোওয়েভ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া হাইওয়ে মোবিলিটি কাভারেজেও ঘাটতি রয়েছে। স্টারলিংকের সেবা এসব সমস্যার কার্যকর সমাধান দিতে পারে।
অনেকে মনে করছেন, স্টারলিংক এলে স্থানীয় আইএসপি ও মোবাইল অপারেটরদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব মনে করেন, সেবার মান উন্নত করতে পারলে স্থানীয় আইএসপিগুলো টিকে থাকতে পারবে। যারা দীর্ঘদিন ধরে নিম্নমানের সেবা দিয়ে আসছে, তাদের জন্য এটি একটি চ্যালেঞ্জ হলেও গুণগত মান উন্নত করার মাধ্যমে তারা প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারে।
তিনি আরও বলেন, বিশেষ করে এনজিওকর্মী, ফ্রিল্যান্সার, উদ্যোক্তা, ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান এবং ডিজিটাল কনটেন্ট নির্মাতাদের জন্য স্টারলিংক নতুন সুযোগ তৈরি করবে।
স্টারলিংকের সেবার মূল্য তুলনামূলক বেশি হবে, তবে এটি প্রতিযোগিতার মাধ্যমে মানসম্মত ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে পারে। আইএসপি ও মোবাইল অপারেটররা যদি তাদের সেবার মান উন্নত করে, তাহলে দেশীয় বিনিয়োগ রক্ষা করা সম্ভব হবে।
এনটিটিএন (ন্যাশনওয়াইড ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক) যেসব প্রতিষ্ঠান একচেটিয়া ব্যবসা করতে চায়, তারা কিছুটা চাপে পড়বে। স্টারলিংক সাবমেরিন কেবল থেকে ডেটা সংযোগ নেবে এবং স্থানীয় পরিবেশকদের সঙ্গে অংশীদারিত্বে কাজ করতে পারে। তবে স্টারলিংক একটি স্বাধীন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এর কার্যক্রম সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকবে।
সরকারের পক্ষ থেকে স্টারলিংকের কার্যক্রম সহজতর করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, যাতে দ্রুত ও নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা জনগণের হাতে পৌঁছানো সম্ভব হয়।