জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের “বিদ্রোহী” হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে অসদাচরণ ও প্রশাসনিক দুর্বলতার অভিযোগ তুলে চার দফা দাবিতে আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১২ মার্চ) সন্ধ্যায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। পরে তাঁরা বিদ্রোহী হলের সামনে অবস্থান নেন।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর অনেক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা ও চাকরির প্রস্তুতির জন্য হলে কিছুদিন থাকতে ইচ্ছুক। তবে প্রশাসন তাঁদের সিট অন্যায়ভাবে বাতিল করছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রভোস্ট শিক্ষার্থীদের এই সমস্যার সমাধানে ব্যর্থ হয়েছেন এবং তাঁদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন।
এছাড়া, ওই দিন বিদ্রোহী হল প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে ১৩তম আবর্তনের শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে তাঁরা ইফতার বয়কটের ডাক দেন। তাঁদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন অন্যান্য ব্যাচের শিক্ষার্থীরাও। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, “বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য ইফতার আয়োজন করা উচিত। আমাদের বাদ দেওয়া হয়েছে, যা স্পষ্ট বৈষম্য।”
প্রভোস্ট ড. মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, “যাদের পড়াশোনা শেষ হয়েছে এবং ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে, তাঁদের হলে থাকার সুযোগ নেই। তাই নিয়ম অনুযায়ী তাঁদের সিট বাতিল করা হয়েছে।”
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি উত্থাপন করেন:
- শিক্ষার্থীদের প্রতি অসৌজন্যমূলক আচরণের জন্য প্রভোস্টকে ক্ষমা চাইতে হবে এবং তাঁর স্থলে নতুন, উপযুক্ত ও যোগ্য প্রভোস্ট নিয়োগ দিতে হবে।
- চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পর উচ্চশিক্ষা ও কর্মজীবনের প্রস্তুতির জন্য শিক্ষার্থীদের অন্তত তিন মাস সময় দিতে হবে।
- বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় আয়োজনে আবাসিক ও অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত খাবার সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
- হলের ভাড়া ৫০ টাকার মধ্যে সীমিত রাখতে হবে এবং বিনামূল্যে ওয়াই-ফাই, উন্নতমানের নিরাপত্তা ও উন্নত খাবার সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা গেস্ট হাউজ ঘেরাও করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গির আলম বলেন, “আপনাদের চারটি দাবি বাস্তবায়নের বিষয়ে প্রশাসনের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। তবে কিছু প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সময় লাগবে। রোববারের মধ্যে এই প্রক্রিয়া শেষ করে দাবিগুলোর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হবে।”
জান্নাতুল/আরএ