শিক্ষক সংকট, সেশন জট, শিক্ষকদের স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানামুখী সমস্যায় জর্জরিত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সমাজ কল্যাণ বিভাগ। সোমবার (০৬ মে) বেলা ১২টায় বিভাগটির শিক্ষার্থীদের সাথে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমানের মতবিনিময়কালে এসব অভিযোগ করেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যালেন্ডারে কোন ছুটি না থাকলেও বিভাগটির শিক্ষার্থীদের ছুটি সবসময়। এমনও হচ্ছে যে পুরো একটা সেমিস্টারে একটি ক্লাসও হচ্ছে না। আবার কখনো যদি একটা ক্লাস নেয় তখন চার-পাঁচটা উপস্থিতি দেখানো হয়। কখনো রাত ১২টার পরে শিক্ষক অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছে। এসময় যদি কোন শিক্ষার্থী ক্লাস করতে না চায় তবে পড়তে হয় শিক্ষকদের রোশনালে।
তারা আরো জানান, সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ইনকোর্স পরীক্ষা নেয়া হয়। যথাযথ ইনকোর্স না নেওয়ার ফলে শিক্ষক তার মর্জি মাফিক নাম্বার দেন। পরীক্ষা শেষ হলে ফলপ্রকাশ নিয়ে অনিশ্চিয়তা দেখা দেয়।
২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের নবীন এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘দীর্ঘ ৮ মাস পূর্বে আমরা অত্র বিভাগে রয়েছি। এ যাবৎ সর্বমোট ৮টি ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেখানে একই সেশনের অন্য বিভাগগুলোর সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
বিভাগটির ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘ ৬ বছর পরেও স্নাতক শেষ করতে পারেননি তারা। সমস্যার কথা শিক্ষকদের জানালেও শিক্ষক সংকট কে দায়ী করছেন তারা। কিন্তু শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারেও নেই বিভাগের চেয়ারম্যানের বিন্দুমাত্র আগ্রহ। এছাড়াও পরীক্ষা নাকের ডগায় না আসা পর্যন্ত দেওয়া হয়না পরিক্ষার সময়সূচি। আবার পরিক্ষার পূর্ব রাত্রে পরিক্ষা বাতিল করছেন । শ্রেনী কক্ষে নেই কোন সাউন্ড সিস্টেম যার ফলস্বরূপ পিছনে বসা শিক্ষার্থীরা পড়েন ভোগান্তিতে।
এবিষয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড এ কে এম মতিনুর রহমান বলেন, ‘সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের বেশকিছু বিভাগে শিক্ষক ও শ্রেণিকক্ষ সংকট রয়েছে। বিভাগগুলোতে বিদ্যমান সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময়ের পরিকল্পনা কিরেছি। এরই ধারাবাহিকতায় আজ (সোমবার) সমাজকল্যাণ বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময়ের বসেছি। সেখানে তারা একাধিক অভিযোগ করেছেন। যা অত্যন্ত দুঃখ জনক। আমি এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে নিরসনের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।’
বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক শ্যাম সুন্দর সরকার বলেন, ‘সব বিভাগেই এধরনের শিক্ষার্থী থাকেন। যার শৃঙ্খলার মধ্যে থাকা ভালো লাগে না। কেউ খারাপ বলছে আবার কেউ ভালো বলবে এটা থাকবেই। আমাদের বিভাগে চরম শিক্ষক সংকট। প্রতিষ্ঠার পর থেকে মাত্র তিনজন শিক্ষক নিয়ে একটা বিভাগ চলছে। আমরা সর্বদা শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে যাওয়ার চেষ্টা করছি।’
তামিম আশরাফ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়